সোমবার, ১৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
মিসরীয় রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ

গুপ্তহত্যা বন্ধে সক্ষম হব : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিসরের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইজ্জত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কারিশম্যাটিক লিডার আখ্যায়িত করে বলেছেন, তার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ও আস্থা রয়েছে। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বৈঠক সম্পর্কে অবহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী সীমাহীন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই অশুভ শক্তির উদ্দেশ্যই হচ্ছে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করা। দেশের সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, সরকার অচিরেই দেশের জনগণের সঙ্গে মিলে এই গুপ্তহত্যা বন্ধে সক্ষম হবে। প্রধানমন্ত্রী বিগত প্রায় সাড়ে সাত বছর সময়ে তার সরকারের সাফল্য এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, সরকার এই সময়ের মধ্যে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালীকরণের পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই উন্নয়ননীতির সাহায্যে মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন সাধন করেছে। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের জীবন-মানের উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর, শান্তিপূর্ণ ২১ শতকের আধুনিক দেশ হিসেবে গড়ে তোলাই তার লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবা খাতে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানের কথা উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি জনগণের জন্য সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচি এবং খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিও তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, তিনি বিরোধী দলে থাকাকালীনই দেশের আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা করেছিলেন এবং প্রকল্প কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তা ভেবে রেখেছিলেন। বাংলাদেশ এবং মিসরের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক বলবৎ থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলেই এই সম্পর্কের ভিত রচিত হয়। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মিসর সফরের কথাও স্মরণ করেন। মিসরের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, এই উন্নতির জন্যই বাংলাদেশ বর্তমানে এশিয়ান টাইগার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের জন্যই বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে এশিয়ান টাইগার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং মিসর বাংলাদেশের এই অর্জন থেকে শিক্ষালাভ করতে চায়। বাংলাদেশের ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ হারে জিডিপি অর্জনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মিসরের রাষ্ট্রদূত একে বিস্ময়কর সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেন। সম্প্রতি মিসরের একটি এয়ার ক্রাফট ভূমধ্যসাগরে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিসরের প্রেসিডেন্টকে শোকবার্তা পাঠানোর জন্যও তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ডিপ্লোমেটিক কোরের ডিন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন। 

সর্বশেষ খবর