বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

কালামের ঐতিহ্যবাহী জিলাপি

মাহবুবুল হক পোলেন, মেহেরপুর

কালামের ঐতিহ্যবাহী জিলাপি

স্বাদ ও নির্ভেজালতার ঐতিহ্য দীর্ঘ ৪০ বৎসর যাবৎ ধরে রেখেছে কালামের জিলাপি। ভোজন বিলাসীদের কাছে সাধারণ সময়েও এর চাহিদা ব্যাপক আর রমজান মাসে তো কথাই নেই। ইফতারে কালামের জিলাপি নেই এটা যেন স্থানীয় ভোজন প্রিয় রোজাদাররা ভাবতেও পারেন না।

মেহেরপুর শহরের থানা রোডে ফয়েজের তিন রাস্তা মোড়ে টিন সেডের আধা পাকা ঘরে ১৯৭৬ সালে আবুল কালাম আজাদ নিজস্ব পদ্ধতিতে  জিলাপি তৈরি শুরু করেন। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও উন্নতমানের জন্য ভোজন বিলাসীদের কাছে অল্প দিনেই ছড়িয়ে পড়ে কালামের জিলাপির নাম। ১৯৮৪ সালে আবুল কালাম আজাদ ইন্তেকাল করলে তার সহোদর মো. আবদুস সাত্তার হাফিজ হাল ধরেন। তখন থেকে হাফিজ এর বৈশিষ্ট্য, স্বাদ ও গুণ অখুণ্ন রেখে সফলতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। কালাম জিলাপির বর্তমান কর্ণধার আ. সাত্তার বলেন, জিলাপি তৈরিতে অধিকাংশ ব্যবসায়ী হাইড্রজেনসহ মানবদেহে ক্ষতিকর বিভিন্ন কেমিক্যালের মিশ্রণ ঘটাচ্ছে কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদানের সমন্বয়ে জিলাপি তৈরি করি বলেই আমাদের জিলাপির প্রতি ক্রেতাদের এত আকর্ষণ। তিনি বলেন, বড় ভাই প্রয়াত আবুল কালাম আজাদ নিজ হাতে আমাকে শিখিয়েছেন কীভাবে জিলাপি ভাজতে হয়। কীভাবে ময়দার সঙ্গে অন্যান্য উপাদানের মিশ্রণ ঘটাতে হয়। তিনি সবসময় বলতেন, ব্যবসার মূল পুঁজি অর্থ নয়, সততা ও নির্ভেজালতা দিয়ে ভোক্তার হূদয় জয় করতে হয়। তার এ অমূল্য বাণী আমি প্রতি পদে পদে স্মরণ করে চলি। প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ কেজি কালামের জিলাপি বিক্রয় হয়। রমজানে তা আরও বেড়ে যায়। গত বছর ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করলেও বিভিন্ন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ বছর ১০ টাকা বাড়িয়ে ১১০ টাকা কেজি দরে জিলাপি বিক্রয় করা হচ্ছে। মেহেরপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ক্রীড়ানুরাগী কামাল খন্দকার জানান, গুণ ও স্বাদের অতুলনীয়তার জন্য জিলাপির কথা মনে পড়লেই এখানে ছুটে আসতে হয়। জেলার বাইরে থেকে আসা অতিথিদেরও এখানে আনতে ভুলি না। একই কথা জানালেন দোকানের নিয়মিত ক্রেতা আতিকুর রহমান স্বপন ও আবু তালেব।

সর্বশেষ খবর