বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

মুখ বন্ধ পুলিশ কর্তাদের

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

মুখ বন্ধ পুলিশ কর্তাদের

এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার অগ্রগতি নিয়ে হঠাৎ মুখে কুলুপ এঁটেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা। তিন দিন ধরে দেশের আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সিএমপির কমিশনার থেকে শুরু করে তদন্ত কর্মকর্তা, কেউই মুখ খুলছেন না। মামলার অগ্রগতির বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে কৌশলে তারা এড়িয়ে চলছেন। তবে প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকতার দাবি, এ হত্যা মামলার কার্যত কোনো অগ্রগতি নেই। তাই বিতর্ক এড়াতে ‘নিশ্চুপ’ থাকার কৌশল অবলম্বন করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তদন্তের অগ্রগতি বিষয়ে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপারেশন ও ক্রাইম) দেবদাস ভট্টচার্য্য বলেন, ‘নো কোশ্চেন, নো অ্যানসার। অবহিত করার মতো কোনো তথ্য পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্রিফিং করে জানিয়ে দেওয়া হবে।’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বলার মতো অগ্রগতি নেই। তাই এ মুহূর্তে মামলার অগ্রগতি নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’ জানা যায়, দেশ আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ১১ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নেই। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ‘শিবির ক্যাডার’ আবু নছর গুন্নু ও শাহ জামান ওরফে রবিন গ্রেফতার এবং হত্যায় ব্যবহার করা মোটরসাইকেল জব্দ—মামলার অগ্রগতি বলতে এটুকুই। যদিও গুন্নুর গ্রেফতার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গুন্নুকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তার কাছ থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। শুরুতে বাবুল আকতারের জঙ্গিবিরোধী তত্পরতার কারণে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে দাবি করা হলেও পরে তা থেকে সরে আসে পুলিশ। রবিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত সুধী সমাবেশে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক এ হত্যাকাণ্ড জঙ্গিরা ঘটিয়েছে কি না তা পুলিশ নিশ্চিত নয় বলে জানান। পরে সিএমপি কার্যালয়ে তার উপস্থিতিতে অভিযান, আসামিকে জেরা, কেস ডকেট পর্যালোচনা, ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর মামলা তদারকির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মোকতার হোসেনকে। তার স্থলে তদারকি কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় উপকমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হককে। এর আগেই তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী রকিব উদ্দিনকে। তার স্থলে এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এ মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। মামলার বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। তাই নিশ্চুপ থাকার কৌশল অবলম্বন করছেন কর্মকর্তারা।’ প্রসঙ্গত, ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার রহস্যু উদ্ঘাটন এবং আসামিদের গ্রেফতারের জন্য কাজ করছে ডিবি, র‌্যাব, সিআইডি, পিবিআই ও সিটিআইসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যান্য সংস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর