শনিবার, ১৮ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

চুয়াডাঙ্গার পাঁচ নদী বিলীন দশায়

জামান আখতার, চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গার পাঁচ নদী বিলীন দশায়

চুয়াডাঙ্গা জেলার পাঁচটি নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এর কোনোটির উৎসমুখে পলি পড়ে, কোনটি দখলদারদের কবলে পড়ে বিলীন দশায় পড়েছে। চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মাথাভাঙ্গা, ভৈরব, কুমার, নবগঙ্গা ও চিত্রা নদী বয়ে গেছে। মাথাভাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গা জেলায় বর্তমানে নিজস্ব স্রোতধারা নিয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছে মাথাভাঙ্গা নদী। এ নদীর মোট দৈর্ঘ্য ১৩৫ কিলোমিটার। যার মধ্যে চুয়াডাঙ্গা অংশে রয়েছে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। ভারতের পদ্মা নদী থেকে বয়ে আসা এ নদী কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর, ভেড়ামারা, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা হয়ে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় প্রবেশ করেছে। নদীটি দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা দিয়ে ভারতে ফিরে সেখানকার চুর্ণি নদীতে পড়েছে। এক সময় এ নদীতে বড় বড় নৌযান চলাচল করলেও বর্তমানে এ নদীর বেহাল দশা জেলাবাসীর দীর্ঘশ্বাসে পরিণত হয়েছে। নদীটির উৎসমূল পলি পড়ে বন্ধ হওয়ায় মূল স্রোতধারা নেই বললেই চলে। ভৈরব : চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা ও জীবননগর অংশে অবস্থান ভৈরব নদের। এ নদের মোট দৈর্ঘ্য ৯৬ কিলোমিটার। যার মধ্যে চুয়াডাঙ্গা অংশে রয়েছে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। ভারতের জলংগী নদী থেকে বয়ে আসা এ নদ মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা হয়ে দামুড়হুদা উপজেলার সুবলপুর এলাকায় এসে মাথাভাঙ্গা নদীতে পতিত হয়েছে। এর একাংশ জীবননগর উপজেলা পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামলে এ নদটিও ছিল কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। বর্তমানে নদটি পলি পড়ে ভরাট হওয়া ও দখলদারদের দখলের মুখে সরু নালা হয়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। কুমার : চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় কুমার নদের অবস্থান। এ নদের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা অংশে প্রায় ২৮ কিলোমিটার রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদী থেকে উত্পন্ন এ নদ ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু, ঝিনাইদহ সদর, শৈলকুপা হয়ে মাগুরা জেলা সদরে নবগঙ্গা নদীতে পতিত হয়েছে। এ নদটিও এখন অস্তিত্ব হারানোর পথে রয়েছে। বছরের অর্ধেক সময় এ নদে পানিপ্রবাহ থাকে না। পলি পড়ে দিন দিন নাব্য হারাচ্ছে এটি। নবগঙ্গা ও চিত্রা : চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় নবগঙ্গা নদীর অবস্থান। নদীটি মাথাভাঙ্গার শাখা নদী। এ নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। পলি পড়ে এর তলদেশ মাথাভাঙ্গা নদী থেকে উপরে উঠে আসায় নদীটি প্রায় সারা বছরই পানিশূন্য থাকে। বর্ষাকালে মাথাভাঙ্গা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে এ নদীতেও কিছুটা পানিপ্রবাহ দেখা যায়।

সর্বশেষ খবর