বুধবার, ২২ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

দিনভর ধর্মঘটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনভর ধর্মঘটে ভোগান্তি

ধর্মঘটে বাস বন্ধ থাকায় অনেককেই বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে —রোহেত রাজীব

সংগঠনের কার্যালয় দখলকে কেন্দ্র করে সায়েদাবাদে পরিবহন শ্রমিকদের দুই পক্ষের ধর্মঘট আর দফায় দফায় সংঘর্ষের কারণে দিনভর চরম ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে থেমে থেমে এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। শ্রমিকদের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে সকাল থেকেই যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বিকাল পর্যন্ত বন্ধ ছিল। ফলে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেটগামী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার অফিস দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জের ধরে সায়েদাবাদ বাসটার্মিনাল এলাকায় অবস্থান নেয় শ্রমিকদের দুই গ্রুপ। তাদের অবস্থান ও ধর্মঘটের কারণে ঢাকার লোকাল এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকে। বাসের জন্য নির্ধারিত সময়ে যাত্রীরা এসে নানা বিড়ম্বনার শিকার হন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় যাত্রীদের কেউ কেউ বড় বড় লাগেজ নিয়ে কেউ বা ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে বাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছিলেন। রোজার মধ্যে হঠাৎ করে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এ সময় অনেককেই পিকআপ কিংবা ট্রাক ভাড়া করে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এসব যানবাহনের ভাড়া আদায় করা হয়েছে অন্যান্য দিনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। বিকালে ধর্মঘট প্রত্যাহার হলে সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। গুলিস্তানের একটি কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে বিরোধে এই ধর্মঘট ডেকেছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং ৪৯৪)। সংগঠনটির সভাপতি আবদুল ওদুদ নয়ন বিকালে জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মঘট স্থগিত করেছেন তারা। তিনি বলেন, আমাদের দাবি ছিল, আমাদের অফিস আমাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া এবং ইউনিয়ন হাইজ্যাকের যে চক্রান্ত চলছে তা বন্ধ করা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহনমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। এ কারণে এবং যাত্রী সাধারণের কথা বিবেচনা করে আমরা ধর্মঘট স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, শ্রমিক নেতারা বসে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেটা নিয়ে ঝামেলা ছিল তা সমাধানের জন্য তারা পরবর্তীতে আবারও বসবেন। এদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বানে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারকে জিম্মি করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই একটি মহল অবৈধ পরিবহন ধর্মঘট ডেকে পরিবহন সেক্টরকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।

সর্বশেষ খবর