শিরোনাম
বুধবার, ২২ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

এক দামের আড়ালে প্রতারণা

১৯ হাজার টাকা লাভ এক পোশাকেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

এক দামের আড়ালে প্রতারণা

চট্টগ্রামের অভিজাত বিপণি মিমি সুপার মার্কেটে একটি লেহেঙ্গার একদাম লেখা ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা। এটির কেনা দাম ১৫ হাজার ৯০০ টাকা। অর্থ্যাৎ এক পোশাকেই মোট লাভ ১৯ হাজার ৬০০ টাকা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ ও অতিমুনাফার দায়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় দোকানদারকে।  নগরীর চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সের ফিক্সড প্রাইজের (একদাম) কাপড়ের দোকান জিনিমিনি। এখানে ৪ হাজার ৭৫০ টাকায় কেনা একটি লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার ৮৫০, ৫ হাজার ১০০ টাকার থ্রি পিস বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার ৫০০ টাকায়। একই মার্কেটের নাদিয়া এম্পোরিয়ামকেও দ্বিগুণ-তিনগুণ লাভে পোশাক বিক্রি করতে দেখেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুই দোকানেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে সব পোশাকের ফিক্সড প্রাইস ট্যাগ ছিঁড়ে ফেলে। কিন্তু দোকানদার কেনার মেমো দেখাতে ব্যর্থ হয়। দুই দোকানকে অতিমূল্যে বিক্রি ও ক্রয় রশিদ দেখাতে না পারায় ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এভাবে চট্টগ্রামের অভিজাত মার্কেটগুলোতে ফিক্সড প্রাইজের নামে চলছে প্রতারণার উৎসব। একদাম মূল্য লিখে রেখে এক পোশাকেই ১৯ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত লাভ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে এ সব তথ্য বের হয়ে আসে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্বদানকারী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট  তাহমিলুর রহমান বলেন, অভিজাত মার্কেটের ব্যবসায়ীরা পোশাক নিয়ে যে আকাশচুম্বি লাভ করেন তা অভিযানে না গেলে বিশ্বাসই করা যেত না। বুধবার সব মার্কেটের দোকানদারদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংরক্ষণের জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু অনেকে তা করেননি। তাই অভিযানে যারা ক্রয়মূল্যের চেয়ে বেশি দাম রাখছেন এবং কাগজপত্র দেখাতে পারছেন না তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে। কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। তারপরও ব্যবসায়ীরা ক্রয়মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেশি লাভে কাপড় বিক্রি করছে। এটি একটি লজ্জাজনক বিষয়। তবে এর জন্য প্রয়োজন মানসিকতা পরিবর্তন ও নৈতিকতাবোধ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ছোলা, চিনি, তেলসহ রমজানের নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের পর জেলা প্রশাসন কাপড়ের দোকানে ভ্রাম্যমাণ অভিযান শুরু করেন। বুধবার প্রথম অভিযান পরিচালনা করেন টেরিবাজারে। সেখানে কাপড়ের ক্রয়মূল্য ও বিক্রি মূল্যে ব্যাপক তারতম্য পেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রথমবারের মতো সতর্ক করে দেন। পরদিনের অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রত্যেক মার্কেটে ক্রয় মূল্যের রশিদ সংরক্ষণ করা, সব বিক্রিতে ক্রেতাদের রশিদ দেওয়া, ক্রেতাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা ও মার্কেটে অভিযোগ বক্স রাখার নির্দেশনা দেন। কিন্তু সতর্কতা ও নির্দেশনার পরও অনেক ব্যবসায়ী আগের মতোই চড়া ও গলাকাটা দামে কাপড় বিক্রি করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযানের প্রথম দিনে টেরিবাজারের স্টার প্লাসকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু রবিবারের অভিযানে সেই একই দোকানে আবারও ৫ হাজার ৩৭০ টাকা ক্রয়মূল্যের লেহেঙ্গা বিক্রি করে ১১ হাজার ৮৬০ টাকায়।

সর্বশেষ খবর