বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
১৪ দলকে খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ নেতারা

টার্গেট কিলিং নিয়ে উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকে খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা বলেছেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর যে টার্গেট কিলিং হচ্ছে এজন্য আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষায় প্রশাসন তত্পর আছে। তবে শুধু প্রশাসন নয়, আমরা সামাজিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা পরিবেষ্টনী চাই। গতকাল বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এ বৈঠকে জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম সভাপতিত্ব করেন। এতে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্মল রোজারিও বলেন, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চারজন খ্রিস্টানকে হত্যার শিকার হতে হয়েছে। সরকারকে অস্থিতিশীল করতে একটি মহল প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য হয়তো আপনারা উদ্বিগ্ন, আমরাও উদ্বিগ্ন। তবে সরকার যেভাবে প্রচেষ্টা করছে, তা অব্যাহত রাখলে এদের প্রতিরোধ করা যাবে। বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি অসীম রঞ্জন বড়ুয়া বলেন, এটা ভুলে গেলে চলবে না, আমি একজন সংখ্যালঘু। মুখে বড় কথা বললে হবে না, ছোট্ট সম্প্রদায় হিসেবে আমরা ভীত। পুলিশের ব্যাপারে তিনি বলেন, ১৪ দলের নেতাদের বলব আপনারা পুলিশকে থামান। পুলিশ মনে হয়, একটু বেশিই করছে। তার কথার প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

সভায় বক্তব্য দেন খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্মল রোজারিও, বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি অসীম রঞ্জন বড়ুয়া, মহাসচিব অশোক বড়ুয়া, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বিপ্লব বড়ুয়া, পিয়ার বড়ুয়া, উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ফরিদুন্নাহার লাইলী, মৃণালকান্তি দাস, এস এম কামাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম, জাসদ একাংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাৎ হোসেন, নুরুর রহমান সেলিম, ডা. শহিদুল্লাহ সিকদার, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাসদের রেজাউর রশীদ খান প্রমুখ।

বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের মহাসচিব অশোক বড়ুয়া বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর যে টার্গেট কিলিং হচ্ছে এজন্য আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষায় প্রশাসন তৎ?পর আছে। তবে শুধু প্রশাসন নয়, আমরা সামাজিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা পরিবেষ্টনী চাই। আশা করি, ১৪ দল আমাদের সঙ্গে থাকবে।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আমরা এই দেশের সন্তান। এখানেই আমাদের বাঁচতে হবে। আমাদের পা দুই নৌকায় নেই। অর্থাৎ? দুই দেশে নেই। আমাদের পা দুটোই বাংলাদেশে। কোনো দেশে আমরা উদ্বাস্তু হিসেবে যেতে চাই না। যদিও কোনো কোনো দেশ মানবাধিকারের নামে উদ্বাস্তু হওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছে। কিন্তু আমরা সেই দেশে গিয়ে উদ্বাস্তু হতে পারি না।

খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বলেন, বিচ্ছিন্ন দু-একটি হত্যায় আমরা ভয় পাই না। এই সরকার ও দলের আমলেই আমরা সবচেয়ে সেফ অ্যান্ড সিকিউরড। এই সরকারই আমাদের বন্ধু সরকার। বরিশালের একটি জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, কূটনীতিকদের কোনো সভায় বসলে এসব ঘটনা আমাদের বিব্রত করে।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়া সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে সংসদ হারিয়ে টার্গেট কিলিং করে সরকারকে বিব্রত করতে চান। তারা প্রমাণ করতে চান দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নেই। কিন্তু এখানেও তারা ব্যর্থ হয়েছে।

সর্বশেষ খবর