রবিবার, ২৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

আবার মিলবে বিলুপ্তপ্রায় মহাশোল

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

আবার মিলবে বিলুপ্তপ্রায় মহাশোল

উপমহাদেশের ‘স্পোর্ট ফিশ’ হিসেবে সমাদৃত মহাশোল মাছ। বাংলাদেশে বিপন্ন প্রজাতির কার্প জাতীয় মাছগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। একবিংশ শতাব্দীতে অনেকের কাছে এই চকচকে সোনালি রঙের দামি মাছটি হয়তো অপরিচিত। ভোজনরসিকদের কাছে জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও কালের বিবর্তনে সুস্বাদু এ মাছটি ছিল বিলুপ্তপ্রায়। তবে আশার কথা হলো, মহাশোল মাছের কৃত্রিম প্রজনন, পোনা উৎপাদন, চাষ কৌশল ও জীন পুল সংরক্ষণ বিষয়ে ইতিমধ্যে গবেষণা চালিয়ে সফল হয়েছে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিলুপ্তপ্রায় মহাশোল মাছ আবার পাওয়া যাবে। তবে এ জন্য উদ্যোক্তা ও চাষী পর্যায়ের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। জানা যায়, এই মহাশোলের জন্ম ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাদদেশে নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী সুসং দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী এবং কংস নদীতে। কয়েক দশক আগেও পাহাড়ি অঞ্চলের (ময়মনসিংহ, সিলেট, দিনাজপুর এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম) খরস্রোতা নদী, ঝর্ণা, লেক এবং খাল-বিলে মহাশোলের দুই প্রজাতির প্রাচুর্যতা ছিল। বর্তমানে মনুষ্যসৃষ্ট এবং প্রাকৃতিক কারণে মহাশোলসহ বিভিন্ন প্রজাতি মাছের বিচরণ এবং প্রজনন ক্ষেত্র ক্রমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে মহাশোলের প্রাপ্যতা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় সোনালি এ মাছটি প্রায় বিলুপ্তির পথে। মহাশোল  হ্রাসের অন্যতম কারণ হিসেবে এর অত্যন্ত কম ডিম ধারণ ক্ষমতাকেও চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা জানিয়েছেন, মহাশোলের বিলুপ্তির কারণে আশির দশকে নেপাল থেকে এ মাছের পোনা আমদানি করা হয়। পরে পুকুরে পোনা ছেড়ে প্রজনন কৌশল ও জীন পুল সংরক্ষণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে মাছ চাষের কৌশলও আয়ত্ত করে বিএফআরআই। ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত মহাশোলের পোনা ইতিমধ্যে রাঙ্গামাটি কাপ্তাই লেক, সোমেশ্বরী এবং কংস নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ভোলা, ফেণী এবং সিলেট অঞ্চলে মাছের চাষ করা হচ্ছে।  ফলে মহাশোলের প্রাপ্যতা সাম্প্রতিককালে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা যায়, আধুনিক মত্স্য চাষে রুই জাতীয় মাছের সঙ্গে মহাশোল মাছের মিশ্রচাষ করা সম্ভব। ফলে পুকুরের পানির উৎপাদনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। মাছটি ওজনে সাধারণত ১৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

সর্বশেষ খবর