রবিবার, ২৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ছুটির দিনে বসুন্ধরায় বাঁধভাঙা জনস্রোত

মোস্তফা মতিহার

ছুটির দিনে বসুন্ধরায় বাঁধভাঙা জনস্রোত

ছুটির দিনে গতকাল বাঁধভাঙা জনস্রোত ছিল দেশের সেরা শপিং মল বসুন্ধরা সিটিতে। জুটি বেঁধে, দলবদ্ধভাবে, কিংবা এককভাবে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই ভিড় জমিয়েছেন মার্কেটটিতে। ফলে মার্কেটের উন্মুক্ত প্রান্তর থেকে শুরু করে প্রতিটি ফ্লোরেই ছিল এ দৃশ্য।

শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় সব শ্রেণির মানুষের প্রাণের স্পন্দন ছিল কেনাকাটায়। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, স্টিচ ও আনস্টিচ থ্রি-পিস, জুয়েলারি, কসমেটিক্স, ইলেকট্রনিক্স আইটেম, টেইলারিং, ঘড়ি, মোবাইল, বাচ্চাদের ড্রেসসহ সব কিছুই এক মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে বলে ক্রেতারা মনের আনন্দে বিভিন্ন ফ্লোরের নির্দিষ্ট দোকান ঘুরে ঘুরে কিনেছেন তাদের পছন্দের জিনিসগুলো। প্রিয়জনকে গিফট দিতে কিংবা পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও নিজের জন্য বসুন্ধরা সিটিকেই প্রাধান্য দেন রুচিশীল ক্রেতারা।  ঈদের এ সময়টাতে অন্য মার্কেট যখন জমে ওঠেনি, তখন তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না বসুন্ধরায়। ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করতে বিক্রেতারাও দম ফেলার ফুরসত পান না। রাজধানীর মিরপুর থেকে কেনাকাটা করতে বসুন্ধরা সিটিতে গতকাল এসেছিলেন তেজগাঁও কলেজের ছাত্রী ফারজানা ইয়াসমিন ববি। তিনি জানান, কেনাকাটার জন্য তার কাছে এই মার্কেটটিকেই সেরা বলে মনে হয়। কারণ এখানে রিজনেবল দামে উন্নতমানের প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। স্ক্র্যাচ কার্ডের অফার শুনে তার পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধবরাও খুব শিগগিরই এখানে কেনাকাটা করতে আসবেন বলেও তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, আত্মীয়স্বজনরা বিদেশ থেকে আমাদের জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসেন। কিন্তু সেগুলোর চেয়ে বসুন্ধরা সিটির প্রোডাক্টকেই আমার কাছে বেশি কোয়ালিটিপুল বলে মনে হয়। জানা গেছে, বিগত কয়েক বছরের সফলতার সব রেকর্ড এবার বসুন্ধরা সিটি ভাঙতে চলেছে। কারণ অন্যবারের তুলনায় এবারের সফলতার পরিসংখ্যানটি অনেক বেশি। ছুটির দিনে প্রতিদিন প্রায় ২ লক্ষাধিক ক্রেতা এই মার্কেটে আসছেন এবং কেনাকাটা করছেন। আর ছুটির দিন ছাড়া কর্মব্যস্ত দিনে লক্ষাধিক ক্রেতার আগমন ঘটছে। তা ছাড়া এবারের সফলতার গল্পে যোগ হয়েছে স্ক্র্যাচ কার্ড। ন্যূনতম ৫০০ টাকার পণ্য কিনলেই ক্রেতারা একটি স্ক্র্যাচ কার্ড পাচ্ছেন। আর স্ক্র্যাচ কার্ড ঘষলেই ক্রেতারা পাচ্ছেন ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড থেকে শুরু করে টয়োটা ভায়োস ১৩০০ সিসি প্রাইভেট কার। এই স্ক্র্যাচ কার্ডের মাধ্যমে মোট ১৩২০০টি পুরস্কার প্রদান করা হবে। বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মেজর মোল্লা মুশতাক রেজা (অব.) জানান, স্ক্র্যাচ কার্ডের মাধ্যমে প্রতিদিনের পুরস্কার প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে বলে ক্রেতাদের মধ্যে পুরস্কার নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ক্রেতাদের অনুপস্থিতিতে র‌্যাফল ড্র হলে তারা পুরস্কার আদৌ পাবেন কিনা— এ ধরনের সন্দেহ দূর করে দিয়েছে বসুন্ধরা সিটির স্ক্যাচ কার্ড পদ্ধতির নতুন এ নিয়মটি। এই প্রথম বাংলাদেশে এটি চালু হয়েছে বলে এটি নিয়ে ক্রেতা সাধারণের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। স্ক্যার্চ কার্ড সিস্টেম চালু করে বসুন্ধরা সিটি বাংলাদেশে এক যুগান্তকারী ইতিহাস তৈরি করেছে বলেও মনে করেন তিনি। তিনি আরও জানান, স্ক্র্যাচ কার্ড সিস্টেমের ফলে ক্রেতাদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব ও অকল্পনীয় সাড়া পাওয়া গেছে। ১৩২০০টি পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড ৫৪৯১টি, কফি মগ ৫৪২০টি, বসুন্ধরা টিস্যু ভ্যালু প্যাক ৬০০টি, ব্লেন্ডার মেশিন ১২০টি, ইলেকট্রিক আয়রন ৪০০টি, হেয়ার ড্রায়ার ২৮০টি, প্রেশার কুকার ২৭০টি, গ্যাস বার্নার ৪০টি, ডিনার সেট ৯৫টি, কফি সেট ৫০টি, শাড়ি ১২০টি, ডায়মন্ড সেট ২টি, মোটরবাইক ৫টি, থাইল্যান্ড ট্যুর ৩টি, রিস্ট ওয়াচ একটি, প্রাইভেট কার ২টিসহ আরও অগণিত পুরস্কার। এরই মধ্যে ক্রেতারা ৫০% গিফট পেয়ে গেছে বলেও জানান মেজর মুশতাক রেজা (অব.)। তিনি বলেন, স্ক্র্যাচ কার্ডের মাধ্যমে এরই মধ্যে ক্রেতারা ২টি ডায়মন্ড সেট, ৫টি মোটর বাইকের মধ্যে ৩টি মোটর বাইকসহ অনেক পুরস্কার পেয়ে গেছে। গত ৪ জুন শুরু হওয়া এই প্রকল্প চাঁদ পর্যন্ত চলবে। ৩৩ দিনের ১৩২০০টি গিফটের মধ্যে প্রাইভেট কার, মোটর বাইক, থাইল্যান্ড ট্যুরসহ ৯টি মেগা গিফট ২৭ জুলাই এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

সর্বশেষ খবর