রবিবার, ২৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

আজিমপুর মসজিদে অনন্য ইফতার

বাদল নূর

আজিমপুর মসজিদে অনন্য ইফতার

রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে অবস্থিত নুরানি জামে মসজিদে প্রতিদিন প্রায় ২০০ রোজাদারের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করা হয়। ভিক্ষুক, ফকির, মিসকিন, মুসাফির, ভবঘুরে, রিকশাচালক, দিনমজুর, ঠেলাগাড়ি চালক, পথচারী, বস্তিবাসী সবার মধ্যে ইফতারি বিতরণের মধ্য দিয়ে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করছেন এর  উদ্যোক্তারা। এ মসজিদে ইফতারি সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ছোলা, মুড়ি, জিলাপি, পিয়াজু, শসা, মালটা, আম, মিষ্টি, বিরিয়ানি, আনারস ও কলা। মসজিদের ভিতরে রোজাদারদের মধ্যে ইফতারি বিতরণ ছাড়াও আজিমপুর কবরস্থানের ভিক্ষুক, ফকির, মিসকিনদের হাতে ইফতারির প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় বিত্তশালীরা এ মসজিদে প্রতিদিন ইফতারি নিয়ে আসেন। এ ছাড়াও কবর জিয়ারতের পাশাপাশি ইফতার করার উদ্দেশ্যে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে এ মসজিদে ইফতারি নিয়ে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ইফতারির কোনো কমতি নেই এ মসজিদে। রফিকুল ইসলাম নামে একজন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রোজাদারদের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করে আমরা শান্তি পাই, আনন্দ পাই। এখানে সবার জন্য সমানভাবে ইফতারি বিতরণ করা হয়।’ তিনি বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ মসজিদে ইফতারি বিতরণ করেন। ইফতারির আয়োজন ওই মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। ইফতারি সামনে নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে বসে ছিলেন রোজাদাররা। সময় যত সন্নিকটে ততই বাড়ছিল রোজাদারের আগমন। আসরের নামাজের পরই শুরু হয়ে যায় ইফতারের আয়োজন।

 একদিকে ছিল ইফতারি বিলি-বণ্টনের ব্যস্ততা, অন্যদিকে চলছিল কোরআন তিলাওয়াত, হামদ-নাত পাঠ ও ধর্মীয় বয়ান। ইফতারের আগে দোয়া করেন মসজিদের ইমাম সুলতান আহমদ। নীরব-নিস্তব্ধ এক পরিবেশ বিরাজ করছিল ওই সময়। এখানে ধনী-গরিবের কোনো ভেদ ছিল না। সবাই যেন মহান আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় ধ্যানমগ্ন। মোনাজাতে অংশ নিয়ে হাজারো কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল আমিন, আমিন। মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে রোজাদাররা মুখে তুলে নেন ইফতারি।

আমিনুর রহমান মানিক ঢাকার ওয়ারী থেকে আজিমপুর মসজিদে আসেন ইফতার করতে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, তার মায়ের কবর আজিমপুর কবরস্থানে। সে কারণে তিনি এ মসজিদে প্রতি বছরই ইফতার করতে আসেন। মায়ের জন্য দোয়া করতেই এ মসজিদে তার আসা। এ ছাড়াও কথা হয় মো. বশির, আরিফুল আলম, মো. সেলিম, মো. শফিকের সঙ্গে। তারা বলেন, কবর জিয়ারত এবং ইফতার করা দুই কারণেই এ মসজিদে আসা। ইফতারি বিতরণের কাজে নিয়োজিত ২০ জন। ১৯৭৪ সাল থেকে এ মসজিদে ইফতারি বিতরণ করা হচ্ছে। মসজিদটি বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর