শনিবার, ২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রতিবাদ করায় গৃহবধূর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে গতকাল ভোর রাতে এক গৃহবধূর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় প্রতিবেশী সোহরাব এ কাণ্ড করে। গুরুতর দগ্ধ ওই গৃহবধূ এখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক নূর মোহাম্মদ জানান, আগুনে গৃহবধূর শরীরের প্রায় ২৫ ভাগ পুড়ে গেছে। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এদিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ওই গৃহবধূ সাংবাদিকদের জানান, প্রতিবেশী সোহরাব তাকে উত্ত্যক্ত করত। মাঝেমধ্যে অনৈতিক প্রস্তাব দিত। বিষয়টি তিনি সোহরাবের অভিভাবকদের জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার ইফতারের পর সোহরাবের বিচার করার জন্য শালিসও বসে। কিন্তু সোহরাব ওই শালিসে যায়নি। গৃহবধূ আরও জানান, গতকাল সাহরির পর প্রাকৃতিক কাজ সারতে বাড়ির বাইরে বের হলে ঝোপের ভিতর থেকে সোহরাব এসে তার গায়ে তরল জাতীয় পদার্থ ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সোহরাব বলে, ‘বিচার দেওয়ার মজা এবার দেখ!’ সারা শরীরে আগুন জ্বলে উঠলে গৃহবধূ পাশের একটি জলাভূমিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে থাকেন। তার আর্তচিত্কার শুনে স্বামী  ছুটে যান। স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও কিছুটা দগ্ধ হন। জানা গেছে, তাকেও ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবেশীদের ভাষ্য অনুযায়ী, সোহরাবের বাবা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও সোহরাব এই গ্রামের নারীদের প্রায়ই উত্ত্যক্ত করে। এটিই তার স্বভাব। কয়েকটি শালিস হলেও সোহরাব  শোধরায়নি। এদিকে অভিযোগের ব্যাপারে জানার জন্য বাড়িতে গিয়ে সোহরাবকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রীও বাড়িতে ছিলেন না।  সোহরাবের চাচা ফিরোজ মিয়া (৫৫) দাবি করেন, ঘটনাটি তার কাছে ষড়যন্ত্র বলে মনে হয়। সোহরাব যদি এ ঘটনায় জড়িত বলে প্রমাণ হয়, তাহলেই তিনি তার শাস্তি চান। ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) হামিদুল হক সকালে হাসপাতালে গৃহবধূকে দেখতে যান। তিনি বলেন,  সোহরাবকে ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম খান বলেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

সর্বশেষ খবর