শনিবার, ২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ছুটিতে এটিএমের টাকা নিয়ে উৎকণ্ঠা

আলী রিয়াজ

টানা নয় দিন ছুটির ফাঁদে ব্যাংক বন্ধ থাকায় নগদ অর্থের লেনদেন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেশে প্রায় ৯০ হাজার এটিএম কার্ড গ্রাহকের একমাত্র ভরসা বুথ। গ্রামীণ গ্রাহকদের লেনদেনের জনপ্রিয় মাধ্যম মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পর্যাপ্ত অর্থ পেতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন অনেকে। ঢাকা থেকে যারা গ্রামে গিয়েছেন অনেকেই নগদ টাকা না নিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিয়েছেন। তারাই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এটিএম বুথে পর্যাপ্ত অর্থ থাকলেও এক-দুই দিন পর এসব বুথে অর্থ থাকবে কিনা তা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও ঈদে অনলাইন ব্যাংকিংয়ে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ ও নিরাপত্তাব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বুথে পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে। কোনো গ্রাহক ভোগান্তির শিকার হবে না। জানা গেছে, ব্যাংকের বাণিজ্যিক ও শিল্পাঞ্চল শাখা ২, ৩, ৪ জুলাই খোলা থাকলেও দেশের অন্যান্য শাখা বন্ধ থাকবে। নির্ধারিত শাখাগুলো তিন দিন মাত্র দুই ঘণ্টা করে খোলা রাখা হবে। এ সময় সারা দেশে ১০ হাজার শাখার মধ্যে মাত্র কয়েকশ শাখা খোলা থাকবে। বড় শহরগুলোর বাইরে কোনো শাখা বা এজেন্ট ব্যাংক খোলা থাকবে না। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের মাত্র ৪০টি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ৬০টি শাখা খোলা থাকবে। তবে তাদের ফার্স্ট ট্র্যাকগুলো সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ সময় সাধারণ গ্রাহকদের এটিএম বুথ, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে। সারা দেশে বিশেষ করে গ্রামীণ ব্যাংকিং ব্যবস্থা এখন অনেকটা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর নির্ভরশীল। শহর এলাকায় বেশির ভাগ গ্রাহক এটিএম বুথ ও ফার্স্ট ট্র্যাকের মাধ্যমে টাকা জমা ও উত্তোলন করেন। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে চাপ বেশি থাকায় এটিএম বুথগুলোয় টাকার স্বল্পতা, কারিগরি ও নেটওয়ার্ক সমস্যায় ভোগান্তিতে পড়েন। ইতিমধ্যে নেটওয়ার্ক ও টাকা সমস্যায় অনেক গ্রাহক ভোগান্তির অভিযোগ করেছেন। গতকাল ঢাকার কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম বুথে নেটওয়ার্ক সমস্যা থাকায় টাকা উত্তোলন করতে না পারার অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাহক। অন্যদিকে অনলাইন পদ্ধতির মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সাধারণ গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশি লেনদেন করেন। বর্তমানে প্রতিদিন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কয়েকশ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দেশের রেমিট্যান্সের একটি বড় অংশও আসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ব্যাংক বন্ধ থাকায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্টগুলো বন্ধ থাকবে। ফলে এ সময় গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে এজেন্টগুলো বন্ধ থাকায় নগদ অর্থ সরবরাহ করতে পারছেন না অনেকেই। বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট নগদ অর্থ দিতে পারছে না। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ঈদের ছুটিতে মোবাইল ব্যাংকিং ও এটিএম বুথে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ করতে সব ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকগুলোকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকার শাখাগুলো ২, ৩, ৪ জুলাই খোলা থাকবে। গ্রাহকদের কোনো সমস্যা হবে না। এ বিষয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ডিএমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, ‘ঈদের ছুটির মধ্যেও আমরা প্রায় ৮০ ভাগ শাখা খোলা রাখব। এটিএম বুথ ও মোবাইল এজেন্টদের টাকা সরবরাহ করতে ঈদের দিনেও বিশেষ ব্যবস্থায় ভল্ট থেকে টাকা সরবরাহ করা হবে। আশা করি গ্রাহকের কোনো সমস্যা হবে না।’

সর্বশেষ খবর