রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঝিনাইদহে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শিবির নেতা নিহত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শিবির নেতা নিহত

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামের রাধামদন মঠের একটু দূরে পুলিশের গুলিতে ইবনুল ইসলাম পারভেজ (২৯) নামে এক শিবির নেতা নিহত হয়েছেন। এটি এমন একটি জায়গায় ঘটল, যেখানে      শুক্রবার ভোরে মঠের সেবায়েত শ্যামানন্দ দাসকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পারভেজ ঝিনাইদহ শহরের বনানীপাড়ার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে। তিনি ঝিনাইদহ শহর শিবিরের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তবে পুলিশের দাবি, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন পারভেজ। এ ঘটনায় দুই কনস্টেবল আরিফ ও সামান্ত কুমার আহত হয়েছেন। তাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করেন, ১৬ জুন রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ৯ নম্বর রোডের ১১ নম্বর বাসার ষষ্ঠতলা থেকে সাদা পোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে যায় পারভেজকে। পারভেজের সঙ্গে আরও তিনজনকে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে শিবির নেতা শহীদ আল মাহমুদ ও আনিচুর রহমান শুক্রবার ভোরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের মাঠে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী ছাত্রশিবির করার কারণে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে আমার নিরাপরাধ ছেলেকে গুলি করে হত্যা করে ক্রসফায়ারের নাটক সাজিয়েছে।’ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ওই এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছিল। পুলিশের টহলযানটি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটী ইউনিয়নের মধুপুর কবরস্থানের কাছে পৌঁছালে ওতপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে শুরু হয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ। এ সময় অজ্ঞাতনামা এক যুবক নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, একটি ছোরা, তিনটি রামদা ও একটি চাপাতি উদ্ধার করে। এদিকে ২৯ জুন শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ইবনুল ইসলাম পারভেজ, শহীদ আল মাহমুদ ও আনিচুর রহমান তাদের কর্মী দাবি করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠানো হয়। অন্যদিকে ঝিনাইদহ শহরের পাবলিক হেলথ জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন সোহেল রানা ২৮ দিন ধরে ও কালীগঞ্জ উপজেলার নলডাঙ্গা এলাকার শিবির কর্মী সবুজ হোসেন ১০ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। ৩ জুন শুক্রবার জুমার নামাজের পর একটি কালো রঙের হাইয়েস গাড়িতে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায় সোহেল রানাকে। সেই থেকে তার কোনো সন্ধান নেই। সোহেল রানা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কামারকুণ্ডু গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। অন্যদিকে নলডাঙ্গা গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে সবুজকে বাড়ি থেকে সাদা পোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে যায়। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সোহেল রানা ও সবুজকে আটক করা হয়নি বলে জানানো হয়েছে। এর আগে ১৩ এপ্রিল সকাল ৮টার দিকে যশোর সদরের হৈবতপুর ইউনিয়নের জোড়াদহ গ্রামের একটি পুকুর থেকে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ পৌরসভা ছাত্রশিবির সভাপতি আবুজর গিফারি ও অপর নেতা শামীম হোসেনের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।

১৮ মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঝিনাইদহ জামতলা মোড় থেকে দুটি মোটরসাইকেলে চার ব্যক্তি পুলিশ পরিচয়ে যশোর এমএম কলেজের ছাত্র আবুজর গিফারি এবং ২৫ মার্চ ঝিনাইদহ কে সি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শামীম হোসেনকে তুলে নিয়ে যায়।

 

সর্বশেষ খবর