মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

হলি আর্টিজানে এখন শুধুই নিস্তব্ধতা

আলী আজম

হলি আর্টিজানে এখন শুধুই নিস্তব্ধতা

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি ঘিরে দেখা দিয়েছে নিস্তব্ধতা। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। রেস্তোরাঁর সামনে ৭৯ ও ৭৫ নম্বর সংযোগ রাস্তায় কাঁটাতারের ব্যারিকেড ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। আছেন নারী পুলিশও।

গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে  যান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি রেস্তোরাঁর সামনে কিছু সময় অবস্থান করেন। চলে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা শোকাহত ও বিপর্যস্ত। তবে আমরা ঘুরে দাঁড়াব। এ দেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই।’ তিনি চলে যাওয়ার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাইকার দুজন প্রতিনিধি এবং জাপান ও ইতালি দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন আটজন প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে আসেন। তারাও রেস্তোরাঁর সামনে কিছু সময় অবস্থান করে চলে যান। বেলা ১টার দিকে সেখানে যায় শিশুদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন অপরাজেয় বাংলাদেশ। তারা ফুল দিয়ে ও মোমবাতি জ্বালিয়ে নিহতদের স্মরণ করে। পরে ৭৯ ও ৭৫ নম্বর রোডের সংযোগ রাস্তায় শিশুদের নিয়ে এক মানববন্ধন করে সংগঠনটি। এ সময় তাদের হাতে সচেতনতামূলক বিভিন্ন প্লাকার্ড ছিল। অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু বলেন, দেশে ১০ লাখ পথশিশু রয়েছে। জঙ্গিদের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবহিত করতে শিশুদের এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। শিশুদের জন্য এটা বিরাট ধাক্কা। তারা যেন এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে পারে। শিশুরা যেন বিপথে না যায়। বিউটিফুল মাইন নামে প্রতিবন্ধী একটি স্কুলের অধ্যক্ষ মমতা সুলতানা নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়েছেন। এভাবে গতকাল সারা দিনই নিহতদের শুভাকাঙ্ক্ষী ও সাধারণ মানুষ ফুল দিয়ে ও মোমবাতি প্রজ্বালন করে নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। রেস্তোরাঁর আশপাশে ভবনের বাসিন্দারা নিরাপত্তা-বেষ্টনী পার হয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছেন। বাসা থেকে বের হলে এবং বাইরে থেকে বাসায় এলেই তল্লাশির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের মধ্যেও অজানা আতঙ্ক। হলি আর্টিজান বেকারির পাশের ভবনের এক বাসিন্দা বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তারা বাইরে বের হচ্ছেন না। কোনো আত্মীয়স্বজন বাসায় আসতে পারছেন না। তারা একরকম অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। এবারের ঈদ এলোমেলো হয়ে গেল। পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, হলি আর্টিজান বেকারি থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাদের আলামত সংগ্রহের কাজ শেষ করেছে। গুলশান-বনানী-বারিধারা প্রবেশ ও বাহিরের ক্ষেত্রে কঠোরতা অবলম্বন করা হচ্ছে। চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিসহ টহল টিম, মোবাইল পার্টি, ফুট পেট্রল, পিকেট ডিউটি চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন বাহিনীর অন্তত ৫০০ জনবলের সমন্বয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর