সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

এবার বাঁশ দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

এবার বাঁশ দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর উপকূলীয় খানখানাবাদ ইউনিয়নের প্রেমাসিয়া, কদমরসুল ও খানখানাবাদ গ্রামের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকাতে নেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৪১ লাখ টাকায় রিং বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প। জোয়ার-ভাটার প্রবল স্রোত ঠেকাতে তৈরি করা হচ্ছে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের অস্থায়ী বেড়িবাঁধ। তবে এটি লোহা-সিমেন্ট-কংক্রিটের নয়, তৈরি হচ্ছে বাঁশ দিয়ে। ইতিমধ্যে খানখানাবাদ ও কদমরসুল গ্রামে বাঁশ ও গাছের খুঁটি দিয়ে (স্থানীয় ভাষায় বল্লি) বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিন কিলোমিটারের বাঁধটির জন্য সরকার ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এ টাকা দিয়ে আধুনিক মানের বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না। বাঁশ ও খুঁটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করলে জোয়ার-ভাটার প্রবল স্রোতে তা অল্পদিনের মধ্যেই ফের পানিতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রেমাসিয়া গ্রামের বাসিন্দা রুস্তম আলী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বলছে, দরপত্রের শিডিউলে বাঁশ দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা কাউকে দেখাতে পারেনি, দেখাচ্ছেও না। তাই অনেক অনিয়মের আশঙ্কা রয়েছে এখানে। তাছাড়া এখানে পানি বেশি ঢুকে প্রেমাসিয়া গ্রাম দিয়ে। কিন্তু বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে অপর দুই গ্রাম দিয়ে। ফলে কাজ চলাকালীন প্রেমাসিয়া দিয়ে জোয়ার-ভাটার পানি ঢোকে নির্মাণাধীন বাঁধ নষ্ট হচ্ছে।          খানখানাবাদের ইউপির চেয়ারম্যান আবু ছিদ্দিক আবু বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের কপালে লিখন। তাই সরকার টাকা বরাদ্দ দিলেও আমরা প্রয়োজনীয় উন্নয়ন পাই না। কিছু মানুষের পকেটের উন্নয়ন হয়। কারণ আমার ইউপিতে বেড়িবাঁধ হচ্ছে, অথচ আমি জানি না। সরকারি বরাদ্দে বাঁধ হচ্ছে, তবে তা বাঁশ গাছের। যা প্রবল জোয়ারের পানিতে সহজেই ভেসে যেতে পারে। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাকা পানিতেই যাবে।’ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খ.ম জুলফিকার তারেক বলেন, ‘বাঁধটির নকশা করেছে আমাদের ডিজাইন বিভাগ। সেখানে বিশেষজ্ঞরাই এ বাঁধটির নকশা করেছেন। ফলে কি দিয়ে কীভাবে এটি করলে টেকসই হবে তা তারাই ভালো বুঝবেন। তবে আমি মনে করি এটি টেকসই হবে। তাছাড়া আগামী ডিসেম্বরে এখানে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।’ প্রসঙ্গত, গত ২২ মে  ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুতে উপকূলীয় উপজেলা বাঁশখালীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে সাতজন নিহতসহ ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ হাজার ৩০৫ একর। ৪০ হাজার হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু মারা যায় ৬০টি। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩টি মসজিদ। ৭ কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৫ কিলোমিটার সড়ক। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫২ হাজার পরিবার। গত ২৩ মে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শনে গেলে ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।

সর্বশেষ খবর