মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভার বৈঠক

যেখানে জঙ্গি সেখানেই প্রতিরোধের নির্দেশ

মানিক মুনতাসির

মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় যেখানে জঙ্গি থাকবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এই অপশক্তিকে নির্মূল করতে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা, উপমন্ত্রীদের নির্দেশনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে জঙ্গি দমন ও প্রতিরোধে দেশব্যাপী জাতীয় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের তিনি বলেন, নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মনিটরিং করে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন। এর জন্য এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন। সচিবালয়ে গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও ঈদের দিন শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনায় মন্ত্রিসভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তবে এই জঙ্গি বা সন্ত্রাসীদের শেকড় যত গভীরেই থাকুক তা উপড়ে ফেলার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। গুলশান হামলায় যারা অংশ নিয়েছেন তাদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে থাকাদের আরও সজাগ দৃষ্টি রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে প্রয়োজনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে উপদেষ্টা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেন আরও নিবিড়ভাবে কাজ করে এ জন্য তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন যাতে কেউ ধর্মীয় বা সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে জঙ্গিবাদ ছড়াতে না পারে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করে যারা জঙ্গিবাদের দিকে তরুণ সমাজকে টানছে তাদের মূলোত্পাটনের জন্য সরকারের যা যা করা দরকার সবই করা হবে। সূত্র জানায়, দেশে চলমান জঙ্গি হামলা বন্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ও জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সব মন্ত্রী ও দলের নেতাদের সতর্ক থাকতে হবে। জনগণের নিরাপত্তায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জনগণকে সতর্ক ও সচেতন করতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে তত্পরতা চালাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ছেলে-মেয়েরা যাতে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত হতে না পারে, নজর রাখার জন্য অভিভাবকদের বোঝাতে হবে। মসজিদ-মন্দির-মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আইনের খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে কুয়েত ও বাহরাইনের সঙ্গে বিনিয়োগ সংক্রান্ত দুটি চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির (আইসিটি) ব্যবহার করে কৃষি খাতে উত্পাদন বাড়াতে ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৬’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনটি ১৯৭৬ সালে অধ্যাদেশ আকারে জারির পর ১৯৮৪ ও ১৯৯৬ সালে সংশোধন করা হয়। সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশের কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনে পরিবর্তন ও বাংলায় করা হয়েছে। আগে ১৮টি ধারা ছিল, চারটি নতুন ধারা সংযোজন করে কলেবর বাড়ানো হয়েছে। এখন ২২টি ধারা।

সর্বশেষ খবর