মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

নিখোঁজ তাজউদ্দিনকে সুস্থ দেখতে চান মা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

গুলশানে জঙ্গি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নিখোঁজ যে ১০ জন যুবকের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাদের একজন লক্ষ্মীপুরের এ টি এম তাজউদ্দিন কাউসার। গণমাধ্যমে খবর দেখে তাজউদ্দিনের মা স্কুলশিক্ষক তাহেরা বেগম উদ্বিগ্ন হয়ে সন্তানকে সুস্থভাবে ফিরে পেতে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আটিয়াতলী গ্রামের রেলের সাবেক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে তাজউদ্দিন ১৯৮১ সালের  ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। এরপর বাড়ির পাশে আটিয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় এবং ১৯৯৯ সালে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০০৪ সালে ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্স টেকনোলজি বিভাগ থেকে বিএসসি ডিগ্রি নেওয়ার পর ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলীয় একটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে সেখানকার এক তরুণীকে বিয়ে করার পর ওই দেশের নাগরিকত্ব পান তাজ। ওই তরুণী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এ দম্পতির দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে অসুস্থ বাবাকে দেখতে দেশে এসে আবার ফিরে যাওয়ার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ অনিয়মিত হয়ে পড়ে তার। ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর তাজউদ্দিনের বাবা মারা যান। তখন চেষ্টা করেও মৃত্যুর খবর জানাতে পারেননি মা তাহেরা। প্রায় এক বছর পর তাজউদ্দিন অপরিচিত নম্বর থেকে বাড়িতে ফোন করলে বাবার মৃত্যুর খবর জানতে পারেন বলে তার মা জানান। এরপর বিভিন্ন ইন্টারনেট কলের মাধ্যমে মাঝেমধ্যে যোগাযোগ হলেও তার অবস্থান জানতে চাইলে লাইন কেটে দিতেন বলে পরিবারের দাবি। গুলশানে জঙ্গি হামলার পর তাজউদ্দিনের নিখোঁজ থাকার তথ্য গণমাধ্যমে দেখে স্কুলশিক্ষক তাহেরা বেগম শনিবার রাতে সন্তানের সন্ধান চেয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় জিডি করেন বলে জানান।

এদিকে আটিয়াতলী গ্রামের কবির আহমদ, মাসুদসহ অনেকে জানান, তাজউদ্দিনের আচার-আচরণ ভালো ছিল। তিনি উগ্রবাদী ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে কারও কোনো অভিযোগ নেই। তবে মাঝেমধ্যে তিনি নামাজ আদায়ের বিষয়ে বলতেন। শিক্ষক মো. শাহজাহান খোকন বলেন, তাজউদ্দিন খুব লাজুক ও মেধাবী ছিলেন। লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরিফুল ইসলাম জানান, তাজউদ্দিনের নিখোঁজের বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়েছে। ২০০৬ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে সেখানে বিয়ে করে ২০১৬ সালেও সেখানে ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই নিখোঁজ হন। বর্তমানে তার অবস্থান বাংলাদেশে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর