বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
জঙ্গি বিরোধী রাজনীতি

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে পাশে চায় আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে মোকাবিলা করতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সমমনা সব রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও আঞ্চলিক সংগঠনকে পাশে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। জোটভুক্ত না হলেও যুগপৎ আন্দোলনে সব শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে ইতোমধ্যে রাজপথে চলা শুরু করেছে শাসক দলটি। গত সোমবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুপ্তহত্যা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ স্লোগানে লক্ষাধিক মানুষের ঢল নামিয়ে শোডাউন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দল। জোটভুক্ত না হলেও এতে সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেয় বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স—বিএনএ আহ্বায়ক ও ৩১-দলীয় জোটের  আহ্বায়ক ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট—বিএনএফের প্রধান আবুল কালাম আজাদ এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন নির্দলীয় সংগঠন ও পেশাজীবী সংগঠন। সোমবারের কর্মসূচিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বেশ কিছু সংগঠনকে পাশে পেয়ে খুশি জোটের প্রধান আওয়ামী লীগ। আগামীতে যে কোনো কর্মসূচিতে জোটের বাইরে থাকা বাম দলগুলোর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির আরও সক্রিয় অংশ চায় তারা। এজন্য এ মুহূর্তে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের জোটের পরিধি বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। এজন্য জোটের বাইরেও রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সাড়াও মিলছে বলে জানা গেছে। সূত্রমতে, সংসদের বাইরে ও ভিতরে থাকা প্রায় সব দলের নেতাই মনে করেন, গুলশানের রেস্টুরেন্ট এবং শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের অদূরে জঙ্গি হামলাকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা আরও বাড়ার আগেই গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে এর সমাধান করা অতি জরুরি।

সূত্র জানায়, জোটের পরিধি বাড়ানো এবং সমমনা রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে এখন এককাতারে আনতে কাজ করছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। তিনি নিয়মিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও আনুষ্ঠানিক বৈঠক করছেন। এর অংশ হিসেবে ঐক্য ন্যাপের পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সামাজিক ঐক্যের শামসুদ্দিন ও তারেক এবং আদিবাসী ফোরামের সঞ্জীব দ্রংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তিনি। এ ছাড়াও প্রবীণ রাজনীতিবিদ গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের খালেকুজ্জামানের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। সূত্রমতে, এই মুহূর্তে জোটভুক্ত না হলেও যুগপৎ আন্দোলনে সব পক্ষের সাড়া মিলেছে বলে জানা গেছে।

১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আমরা সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে আগামী ১২ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারা দেশে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভায় সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করব। তিনি বলেন, জামায়াত ও স্বাধীনতাবিরোধী মতাদর্শ ছাড়া যে কোনো রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনকে সঙ্গে নিয়েই আমরা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে চাই।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং দলের উপ-দফতর সম্পাদক কেন্দ্রীয় ১৪ দলের দফতর সমন্বয়ক মৃণাল কান্তি দাস বলেন, আমরা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাই। এজন্য এখন প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সহযোগিতা। এ লক্ষ্যে আমরা যোগাযোগ শুরু করেছি, সাড়াও মিলছে। জোটভুক্ত আন্দোলন না করলেও যুগপৎ আন্দোলনে সব শক্তিই আওয়ামী লীগের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কর্মসূচি প্রমাণ করে রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন আমাদের পাশে আছে, থাকবে।

সর্বশেষ খবর