বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

হজ ব্যবস্থাপনায় দোভাষী সংকট

সমাধানে আজ বৈঠক

মোস্তফা কাজল

হজ ব্যবস্থাপনায় দোভাষী সংকট দিন দিন প্রকট হচ্ছে। পাশাপাশি হজ গমনেচ্ছু মুসল্লির সংখ্যা বাড়ছেই। গত সাত বছরে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি নারী-পুরুষ ও শিশু পবিত্র হজ পালন করেছেন। ২০০৯ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ২২০ জন। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৫০ জনে দাঁড়ায়। তবে প্রতিবছর হজকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করলেও সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় এখনো দোভাষীর তীব্র সংকট রয়েই গেছে। আজ দোভাষীর সংকট নিরসনে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে সভা ডাকা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে প্রায় এক লাখ নারী ও পুরুষ পবিত্র হজ পালন করবেন। সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য এবার দুই ধরনের প্যাকেজ রয়েছে। হজ পালনের খরচ আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও গমনেচ্ছুর সংখ্যা বেড়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়, একাধিক হজ এজেন্সি ও একাধিকবার হজ পালন করেছেন এমন হাজী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিবছর হজকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হলেও সরকারি-বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় এখনো দোভাষীর তীব্র সংকট রয়েই গেছে। খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, লক্ষাধিক হাজীর হজ ব্যবস্থাপনায় ধর্ম মন্ত্রণালয় প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩৫ সদস্যের প্রশাসনিক দল পাঠায়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও প্রশাসনিক দলের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। হজ চলাকালে প্রশাসনিক দলের সদস্যরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে হাজীদের দেখভাল করে থাকেন। প্রশাসনিক দল ছাড়াও মেডিকেল টিমের সদস্য হিসেবে ডাক্তার, নার্স, ফার্মাসিস্টসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সৌদি-আরব গমন করেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সৌদি আরবে নির্বিঘ্নে চলাচল ও যোগাযোগের জন্য আরবি ভাষা জানা থাকা অত্যাবশ্যক। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রশাসনিক কিংবা মেডিকেল টিমের সদস্য হিসেবে যারা যান, তাদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া সিংহভাগ সদস্যই আরবি ভাষা জানেন না। ফলে হজ চলাকালে হাজীদের নানা দুর্ভোগ লাঘবে সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিবছর হজ শেষে সার্বিক মূল্যায়নে দোভাষী সংকটের বিষয়টি আলোচিত হলেও রহস্যজনক কারণে এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা। এদিকে বাংলাদেশ থেকে হজ পালনে যতজন যান তাদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় অর্থাৎ বিভিন্ন হজ এজেন্সির মাধ্যমে গিয়ে থাকেন। সরকারি ব্যবস্থাপনার মতো বেসরকারি বিভিন্ন হজ এজেন্সিতেও দোভাষীর সংকট তীব্র। এ ছাড়া হজ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত একাধিক সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা বলেন, সুষ্ঠুভাবে হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে পরিকল্পিতভাবে প্রশিক্ষিত দোভাষী তৈরি করা প্রয়োজন। দোভাষীর সংখ্যা যত বাড়বে হজ করা তত সহজ হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর