বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়বে বিএনপি জোট

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘জঙ্গিবাদ দমনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ঐক্যের ডাককে প্রত্যাখ্যান করে ১৪ দল জনগণকে উপেক্ষা করেছে।’ গত রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ২০-দলীয় জোটের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব ও জোটের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈঠক শুরু হয়ে ১০টার দিকে শেষ হয়। এরপর একই স্থানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সঙ্গেও দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় সিদ্ধান্ত হয় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা ও ঐক্য গড়তে ঢাকায় জাতীয় কনভেনশন ও বৃহত্তর ১৯ জেলায় পর্যায়ক্রমে সমাবেশ করবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট।

খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ২০-দলীয় জোটের বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর  মাওলানা আবদুল হালিম, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের এই কঠিন সংকট মুহূর্তে আওয়ামী লীগ জাতিকে বিভক্ত করতে চায়। তারা চলমান সংকট আরও গভীরে ফেলতে চায়। তিনি বলেন, উগ্রবাদ দমনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করে ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগ নেতারা জাতির প্রতি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মনে করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট। গুলশানে হামলার ঘটনায় ২০ দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ, নিন্দা ও শোক প্রকাশ করা হয়। যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। হামলার পর খালেদা জিয়া ঐক্যের যে আহ্বান জানিয়েছেন তাতে ২০ দলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্বশীল হতে পারছেন না। বিএনপি চেয়ারপারসনের ঐক্যে সাড়া দিয়ে সরকারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য পুনরায় আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া আজ রাতে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক শেষে জাতীয় ঐক্য গঠনসহ জঙ্গি মোকাবিলা ইস্যুতে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান জোটের এই মুখপাত্র।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা যায়, দেশব্যাপী জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ার ঘোষণার পর বেগম জিয়া তার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তারই অংশ হিসেবে গত রাতের বৈঠক দুটি ছাড়াও আজ রাতে একই স্থানে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবী ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন খালেদা জিয়া। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা জাতীয় ঐক্য গড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

 তবে তাদের প্রত্যাশা— শেষ পর্যন্ত সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং চলমান ভয়ানক জঙ্গি তত্পরতা থেকে দেশ ও মানুষকে রক্ষার জন্য দলমতনির্বিশেষে ‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ে তুলতে খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দেবে সরকার।

সর্বশেষ খবর