রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক উল্লম্ফন থমকে দাঁড়িয়েছে

-----মামুন রশীদ

অর্থনৈতিক উল্লম্ফন থমকে দাঁড়িয়েছে

গুলশান-শোলাকিয়ায় জঙ্গি-সন্ত্রাসী হামলার পর স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে উল্লম্ফন ঘটছিল তা থমকে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন দেশের আর্থিক নীতি-বিশ্লেষক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মামুন রশীদ। এই থমকে দাঁড়ানোটা সাময়িক হবে এমন আশাবাদ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত  হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমরা ও বিদেশিরা মিলে একেকটা উন্নয়নের আলোকবর্তিকা। বিদেশিরা যদি না আসতে পারেন, তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কত আর আমরা বিদেশে যাব। নতুনভাবে যারা উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলেন, বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন, তারাও থমকে দাঁড়িয়েছেন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মামুন রশীদ আরও বলেন, সরকার চেষ্টা করছে নিরাপত্তা জোরদার করতে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটা কূটনৈতিক ইউনিট গঠন করেছে। এটা ভালো উদ্যোগ। বনানী-গুলশান ও বারিধারায় রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনেক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এগুলো খুব ভালো। এরপর আমরা যদি হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো আগের জায়গায় নিয়ে আসতে পারি, বিদেশিরা যদি বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে পারেন, তাহলে সমস্যা হবে না। যদি না করতে পারি তাহলে সমস্যা হবে। তিনি বলেন, গুলশান-শোলাকিয়ায় জঙ্গি-সন্ত্রাসী হামলায় পরিস্থিতি থমকে গিয়েছে। আমাদের অনেকে প্রশ্ন করছেন, বাংলাদেশ ছাড়াও তো অনেক দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এর পরও শুধু বাংলাদেশ নিয়ে বিদেশিরা এ ধরনের অবস্থান নিচ্ছে কেন? এর কারণ হলো, বাংলাদেশ এ পর্যন্ত নিজের মতো করে উন্নতি করেছে।

 বিদেশিরা যেখানে পেরেছে সহায়তা করেছে। তারা (বিদেশি) নিজেরা কিন্তু অংশগ্রহণ করেনি। সুতরাং বাংলাদেশ আর ভারত কিন্তু এক জিনিস নয়। বাংলাদেশ আর বেলজিয়াম ও ফ্রান্স এক জিনিস না। বিশিষ্ট এ অর্থনীতিবিদের মতে, বাংলাদেশ নিয়ে সবাই একটু সাবধান থাকে। এর কারণ হলো, বাংলাদেশ মুসলিম প্রভাবিত দেশ। আর ঘটনাগুলোও মুসলিম ও ইসলাম নিয়ে আবর্তিত হচ্ছে। বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে অনেক দেশ ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। তাদের দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে না আসার সতর্ক বার্তা দিয়েছে। নাগরিকদের সাবধান হতে বলেছে। ফলে অনেকে ছুটি নিয়ে চলে গেছে। তারা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বাংলাদেশে আসবে না। মামুন রশীদ বলেন, অনেক দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তাদের বলেছে, অত্যাবশ্যকীয় না হলে তোমরা বাংলাদেশ ভ্রমণ করো না। আর বাকিদের বলেছে, তোমরা ভ্রমণ করো না। কিছু দূতাবাস তাদের সেবা স্থানান্তর করে ফেলেছে। এ প্রেক্ষাপটে ভ্রমণ সতর্কতায় বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশে আসতে পারবে না। বিদেশি পরামর্শকরা আসতে পারছে না। বিদেশি দূতাবাসগুলোর লোকেরা আসতে পারছে না। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকজনের ইচ্ছা থাকাসত্ত্বেও আসতে পারছে না। তাদের পরিবার-পরিজনও ছাড়ছে না।

সর্বশেষ খবর