শিরোনাম
রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গি দমনে নিয়োগ পাচ্ছে আরও ২০ হাজার পুলিশ

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

জঙ্গি দমনে নিয়োগ পাচ্ছে আরও ২০ হাজার পুলিশ

জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে এ বছরের মধ্যেই আরও ২০ হাজার পুলিশ নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যে কোনো ধরনের সহিংস পরিস্থিতি মোকাবিলায় এসব পুলিশ সদস্যের হাতে থাকবে অত্যাধুনিক অস্ত্র। তাদের দেওয়া হবে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দেশব্যাপী জঙ্গি হামলার আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ হাজার নতুন পুলিশ নিয়োগের প্রস্তাব ছিল। এর মধ্যে ২০ হাজার নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে গত বছর। আরও ২০ হাজার পুলিশ নিয়োগের প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে এসেছে। খুব দ্রুত এর অনুমোদন দেওয়া হবে। পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল আহছান জানান, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে পুলিশে তাদের নতুন জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বর্তমানে দেশের পুলিশ বাহিনীতে যে পরিমাণ জনবল রয়েছে সেটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে  করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। পুলিশ সদর দফতর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, সারা দেশে পুলিশের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে কমবেশি ৩০ হাজারের মতো কর্মরত থাকে রাজধানী ঢাকাতে। মানুষকে অধিক সেবা দিতে শুধু রাজধানীতেই এক লাখ পুলিশ দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, দেশে প্রতি ১ হাজার ৩০ জন মানুষের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন একজন পুলিশ সদস্য। যেখানে পাশের দেশ ভারতে রয়েছে প্রতি ৭৩০ জনের জন্য একজন এবং জাপানে ২৫০ জনের নিরাপত্তায় একজন করে পুলিশ। এ পরিস্থিতিতে পুলিশের জনবল ঘাটতির বিষয়টি একাধিকবার সংস্থাটির সদর দফতর থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। উপরন্তু সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলার কারণে বিদেশিদের মধ্যে এক ধরনের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। তৈরি পোশাকের ক্রেতারা এখন তাদের দরদামের বিষয়গুলো নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হংকং ও সিঙ্গাপুরের মতো তৃতীয় কোনো দেশে আলোচনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের (এপিজি) একটি বিদেশি প্রতিনিধি দলের আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসার কথা ছিল, তারাও তাদের কর্মসূচি বাতিল করেছে। নিরাপত্তা ইস্যুতে বাতিল হয়েছে আরও কয়েকটি কর্মসূচি। বিদেশিদের নিরাপত্তার পাশাপাশি শঙ্কা তৈরি হয়েছে বিদেশি বিনিয়োগেও। অর্থনীতিতে গতিশীল রাখতে নিরাপত্তাজনিত এই ইস্যুটি ভাবাচ্ছে অর্থ বিভাগকেও। ফলে অর্থ মন্ত্রণালয় মনে করছে, দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী হামলার যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে তার প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দফতর কাজ করছে। বিদেশিদের মধ্যে যে আস্থার সংকট দেখা যাচ্ছে সেটি দূর করাই এখন আমাদের লক্ষ্য। এ কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো, তাদের জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আনতে যে অর্থ দরকার- আমরা সেটি যৌক্তিক বিবেচনায় বরাদ্দ দিতে প্রস্তুত।

সর্বশেষ খবর