বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
তনু হত্যার চার মাস আজ

মামলা আটকে আছে ডিএনএ রিপোর্টে

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার চার মাস পূর্ণ হবে আজ বুধবার। চার মাসেও আশার আলো নেই তনু হত্যা মামলায়। মামলা আটকে আছে ডিএনএ রিপোর্টে। তনুর কাপড়ে পাওয়া তিন পুরুষের শুক্রাণুর সঙ্গে সন্দেহভাজনদের ডিএনও মিলানোর কথা থাকলেও তা থমকে আছে। সিআইডি এক সময় সন্দেহভাজনদের ডিএনএ পরীক্ষার কথা বললেও এখন তারা মুখ খুলছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেছেন— কাজ চলছে, তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এ নিয়ে তনুর পরিবারের ক্ষোভের শেষ নেই। তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, সিআইডি বলেছিল ঈদের পরে তনুর মামলার অগ্রগতি হবে। ঈদের পর ১৩ দিনেও তেমন খোঁজখবর পাইনি। এদিকে সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খানকেও বদলি করা হয়েছে। সিআইডি আমাদের শেষ ভরসা, সিআইডি পিছিয়ে গেলে আমরা কোথায় যাব? মেয়ে হারিয়েছি, বিচারটা পেলে মনে শান্তি পাব। তিনি বলেন, দুই বছরের তনুকে নিয়ে সেনানিবাসের বাসায় এসেছিলাম। পাঁচ বছর বয়সে তাকে স্কুলে ভর্তি করি। সেই ছোট বয়স থেকে সে নাটকে অংশ নিত। তার নাটকের ছোট পোশাকগুলো এখনো আছে। ছোট ব্লাউজ, ছোট শাড়ি ইত্যাদি। সে গুলো জড়িয়ে ধরে এখন কাঁদি। বাসার খুঁটিনাটি তনু বাইরে থেকে কিনে আনত। বাসায় চারপাশে তার হাতের ছোঁয়া। মনে হয় তনু আমার চারপাশে ঘুরছে।

তনুর আঁকা ছবি এখনো দেয়ালে ঝুলছে। সে কম্পিউটার শিখেছে। সেলাই শিখেছে। হ্যান্ডবল খেলা, দড়ির লাফ সব সে জানত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, ২০ মার্চ রাতে বাসার পাশের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২১ মার্চ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে তার প্রথম ময়নাতদন্ত করেন ডা. শারমিন সুলতানা। ওই দিন অজ্ঞাতদের আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন তনুর বাবা ইয়ার হোসেন। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের কবর থেকে উত্তোলন ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৪ এপ্রিল দেওয়া হয় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত না থাকায় সমালোচনার মুখে পড়ে ফরেনসিক বিভাগ। ১৬ মে তনুর কাপড়ে তিন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়া যাওয়ার খবর সিআইডির কুমিল্লা অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আবারও আলোচনায় উঠে আসে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। ১২ জুন ২য় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনেও তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত না থাকার কথা বলা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর