শ্রাবণের বারিধারায় সিক্ত প্রকৃতি। বাদল দিনের কদম ফোটার দিন তো প্রায় এক মাস আগেই শুরু। তাতে কী, প্রকৃতিতে তো বর্ষা এখনো তার বারিধারা প্রবহমান রাখছে। আর শ্রাবণের এই সময়টায় বর্ষাকে বরণ করতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেনি সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। গতকাল শ্রাবণের সপ্তম দিনে নাচে-গানে, আবৃত্তি ও কথামালায় বর্ষাকে বরণ করেছে এই সাংস্কৃতিক সংগঠনটি। আকাশি-নীল রঙের শাড়ি আর খোঁপায় চালতা-কদম ফুল গুঁজে সেজেছিল মেয়েরা। ছেলেরা বর্ষা বরণে সেজেছিল নীল পাঞ্জাবি আর সাদা পায়জামায়। শিল্পী এইচ এম রতনের ‘মেঘমল্লা’র রাগ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সকাল ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় শুরু হয় বর্ষা বরণের এই আয়োজন। এরপর দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন, নৃত্যম, নৃত্যজন, নটরাজ ও সুরবিহার। ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করে আদিবাসী সংগঠন গারো কালচারাল একাডেমি। এতে সমবেত সংগীত পরিবেশন করে সুর বিহার, বহ্নিশিখা, সুরসপ্তক, ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সংগীত একাডেমি ও আয়োজক সংগঠন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। অনুষ্ঠানে একক সংগীত পরিবেশন করেন মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না, প্রিয়াংকা গোপ, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, আবুবকর সিদ্দিক ও বিমান চন্দ্র বিশ্বাস। আবৃত্তি পরিবেশন করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি। ‘আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে’, ‘রুম ঝুম রুম ঝুম’, ‘ঘোর ঘনঘটা ছাইল গগন’, ‘এলো এলো বর্ষা ঋতু’, ‘এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে’, ‘আষাঢ় মাইসা ভাসা পানিরে’, ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’, ‘পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে’, ‘আষাঢ় মাসে দেখরে নাগের গর্জন’, ‘বাদল-দিনে প্রথম কদম ফুল করেছ দান’ বর্ষার এমন অমিয় বাণীর গানে ও সুরের মূর্ছনায় বর্ষাপ্রিয়দের মোহিত করেন শিল্পীরা। বর্ষা কথন পর্বে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি ড. নিগার চৌধুরী। ধরণীকে সবুজ করার লক্ষ্যে এ পর্বে শিশু-কিশোরদের মধ্যে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করা হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে।