সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

নজরদারিতে বিদেশি শিক্ষকরা

ওয়ার্ক পারমিট ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ অন্যান্য তথ্য খতিয়ে দেখছে ইউজিসি

আকতারুজ্জামান

দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষকদের তালিকা সংগ্রহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। দেশে কর্মরত শিক্ষকদের নিরাপত্তা প্রদানে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে অবগত করা ছাড়াও বিদেশি শিক্ষকদের রাখা হয়েছে নজরদারিতে। এ শিক্ষকরা দেশের অর্থ কোনো জঙ্গি কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করছেন কি না, বিদেশে অর্থ পাচার করছেন কি না, তা জানতে ইউজিসি সংগ্রহ করেছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত নানা তথ্য। এ শিক্ষকরা অবৈধ কোনো উপায়ে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন কি না, তাদের ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে কি না এবং ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ কত দিন রয়েছে সেসব তথ্যও হাতে রেখেছে মঞ্জুরি কমিশন। দেশে বিভিন্ন স্থানে বিদেশিরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর সম্প্রতি বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নোটিস পাঠিয়ে এ শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ করেছে ইউজিসি। ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে  বিদেশি শিক্ষকদের তথ্য’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, দেশের ৯২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তথ্য চেয়েছিল ইউজিসি। এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট ২৮ জন বিদেশি শিক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জন যুক্তরাষ্ট্রের, সাতজন ভারতের, ছয়জন ফিলিপাইনের, দুজন জাপানের ও একজন অস্ট্রেলিয়ার। সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো এ ব্যাপারে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করেনি। রাজধানীর উত্তরার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, বারিধারার ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস তথ্য না দেওয়ার তালিকায় রয়েছে। ইউজিসি সূত্র জানিয়েছে, দেশে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের তালিকাও সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২০১৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৪৩ জন। এদের মধ্যে ১ হাজার ২৬৫ জনই ছিল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রামের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউজিসির এক কর্তাব্যক্তি বলেন, বিদেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নজরে রাখতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন হলেই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করা হবে। ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিদেশি শিক্ষকদের নজরদারিতে রাখতেই তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিদেশিরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। কর্মরত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বিদেশিদের নিরাপত্তায় যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর তারা অনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে কি না, অর্থ পাচার করছে কি না সেসবও দেখভাল করা হচ্ছে। কাউকে সন্দেহভাজন মনে হলেই এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর