শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

না ফেরার দেশে মহাশ্বেতা দেবী

কলকাতা প্রতিনিধি

না ফেরার দেশে মহাশ্বেতা দেবী

চলে গেলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী। গতকাল বিকালে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ নার্সিং হোমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। মাল্টিঅর্গান ফেইলিওরেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

বার্ধক্যজনিত একাধিক সমস্যা নিয়ে গত ২২ মে বেলভিউ নার্সিং হোমে ভর্তি হন তিনি। সেই থেকেই ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেটরেও স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন তিনি। কিন্তু শনিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন মহাশ্বেতা দেবী। এরপর বিকালে সবাইকে ছেড়ে পরলোকে পাড়ি দেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই লেখিকার শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তার স্বজন, পরিচিত ব্যক্তি ও বন্ধুবান্ধবরা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিয়মিত তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছিলেন, যোগাযোগ রাখছিলেন তার চিকিৎসকদের সঙ্গেও। মহাশ্বেতা দেবীকে দেখতে কয়েক দিন আগেও হাসপাতালে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মহাশ্বেতা দেবীর প্রয়াণের খবর শুনেই হাসপাতালে ছুটে যান কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, গায়ক মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন প্রমুখ। ১৯২৬ সালের ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের ঢাকার এক শিক্ষিত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এই বিশিষ্ট লেখিকা। বাবা মণীশ ঘটক ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি এবং সাহিত্যিক। তার কাকা ঋত্তৃক ঘটক ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক। মা ধারিত্রী দেবীও একজন প্রসিদ্ধ লেখিকা ও সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ঢাকাতেই স্কুল জীবন শেষ করেন তিনি। দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন মহাশ্বেতা দেবী। এপার এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাধের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি নিয়ে স্নাতক হন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর লাভ করেন তিনি। পড়াশোনার পাঠ শেষ করে বিশিষ্ট নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন মহাশ্বেতা দেবী। কিন্তু সেই বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। ১৯৫৯ সালেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাদের। ১৯৬৪ সালে বিজয়গড় কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়েই তার চাকরি জীবন শুরু। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা ও সৃষ্টিমূলক লেখালেখির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯৭৫ সালে হাজার চুরাশির মা, ১৯৭৭ সালে অরণ্যের অধিকার, অগ্নিগর্ভ (১৯৭৮), তীতুমীর, রুদালি, ছোটি মুন্ডা ইভাম তার তীর।

সর্বশেষ খবর