রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

জনপ্রতিরোধ গড়ে উঠছে

------ আসাদুজ্জামান আসাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

জনপ্রতিরোধ গড়ে উঠছে

কিছুদিন পর পরই দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলা চালানো হচ্ছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে ধর্মীয় গুরু এবং বিদেশি নাগরিকদের টার্গেট করছে জঙ্গিরা।

এতে আতঙ্কিত তারা। পাশাপাশি আতঙ্কিত হয়ে উঠেছেন দেশের সুধীসমাজ এবং সাধারণ মানুষও। তবে জঙ্গি দমনে জনপ্রতিরোধ গড়ে উঠছে বলে মনে করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বলেন, রাজশাহীকে জঙ্গিবাদের ঘাঁটিতে পরিণত করতে চেয়েছিল একটি রাজনৈতিক শক্তি। কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রতিরোধে তা হতে পারেনি। নানা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজশাহীর অবদান আছে। ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ মিনার রাজশাহীতে গড়ে উঠেছিল, পাকসেনাদের গুলিতে জীবন দিয়ে ছাত্রদের জীবন রক্ষা করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুজ্জোহা। এমন ইতিহাস যাদের আছে তারা জঙ্গিবাদের কাছে মাথানত করবে না। রাজশাহী থেকে জঙ্গিবিরোধী আওয়াজ উঠেছিল ২০০৪ সালে। সেই ধারা এখনো চলছে। জঙ্গিরা কখনো রাজশাহীকে তাদের অভ্যয়াশ্রম বানাতে পারবে না। আসাদ বলেন, দেশে নতুন করে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর আবির্ভাব হয়নি। এ দেশে কোনো আইএসও নেই। প্রকাশ্যে এবং গোপনে যেসব হামলা চালানো হচ্ছে, সেসবের সঙ্গে সরাসরি বিএনপি-জামায়াতের লোকজন জড়িত। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় থেকেই আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে তারা তাদের চেহারা উন্মোচন করেছে। এখন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তারা তাদের হামলার ধরন পাল্টেছে মাত্র। আসাদ বলেন, জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত এখনো জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। তাদের জঙ্গিবিরোধী একটি মানববন্ধনেও দাঁড়াতে দেখা যায়নি। তারা হামলার কোনো প্রতিবাদ করেনি। কারণ, তারা নিজেরাই এসবের সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, জঙ্গি হামলা চালিয়ে সরকার উত্খাতের যত ষড়যন্ত্রই করা হোক না কেন, তা সম্ভব হবে না। কারণ, জঙ্গি দমনে জনপ্রতিরোধ গড়ে উঠেছে। পাড়ায়-মহল্লায় জনসচেতনতা তৈরি হয়েছে। জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় গ্রামে গ্রামে প্রতিরোধ কমিটি হচ্ছে জানিয়ে আসাদ বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি জঙ্গি মোকাবিলায় আগে মৌখিক নির্দেশনা দিত। গুলশানের বেকারিতে হামলার পর দলের পক্ষ থেকে লিখিত নির্দেশনা এসেছে। সে মতে রাজশাহীতে এরই মধ্যে একটি জঙ্গি প্রতিরোধ কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটিতে ১৪ দলসহ ১২০টি সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আছেন। সবাই হাতে হাত রেখে কাজ করছেন। তিনি বলেন, রাজশাহীর ৯টি উপজেলাতেও জঙ্গি প্রতিরোধ উপজেলা কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কমিটি হচ্ছে ইউনিয়নে ইউনিয়নে, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডেও। একটি ওয়ার্ডে একাধিক গ্রাম থাকলে প্রতিটি গ্রামেও একটি করে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এভাবে রাজশাহীর প্রতিটি গ্রামে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হচ্ছে। রাজশাহীতে জঙ্গিবাদের কোনো ঠাঁই হবে না। আসাদ বলেন, ‘এসব করার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে দুটি উড়ো চিঠি দিয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবু আমরা থেমে যাইনি। জঙ্গি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা স্কুল-কলেজে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বোঝাচ্ছেন, যেন তারা বিপথে না যায়। মোড়ে মোড়ে, চায়ের স্টলে চলছে প্রচারণা। আমাদের দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানেরাও গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের সচেতন করে তুলছেন। এভাবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রাজশাহীর ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে উঠছে।’

সর্বশেষ খবর