আধিপত্য বিস্তার ও নির্বাচনী বিরোধকে কেন্দ্র করে নাটোরের সিংড়ায় সাবেক ইউপি সদস্য মোজাফফর হোসেন মোজাইকে (৪০) কুপিয়ে ও তার বড় ভাই হাছেন আলীর (৫০) ডান পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। এ সময় অপর ছোট ভাইয়ের ডান হাতের আঙ্গুল কেটে দেওয়া হয়েছে। গতকাল ভোরে সিংড়া উপজেলার ২ নম্বর ডাহিয়া ইউনিয়নের চলনবিল অধ্যুষিত (সর্বহারা এলাকা হিসেবে পরিচিত) বড়গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোজাফফর হোসেন ও হাছেন আলী বড়গ্রামের মৃত আবদুস সোবহানের ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, চলনবিলের প্রত্যন্ত ডাহিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোজাফফর হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল বর্তমান ইউপি সদস্য সাবেক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ইউনুস আলীর। সম্প্রতি অত্র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নির্বাচনে মোজাফফর হোসেন হেরে যাওয়ায় দুজনের বিরোধ বড় আকার ধারণ করে। তবে বিরোধকারী উভয় পরস্পর আপন চাচাতো ভাই। গতকাল ভোরে ইউনুস আলীর লোকজন মোজাফফর হোসেন ও তার দুই ভাই হাছেন আলী এবং মহসিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে মোজাফফর হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে স্থানীয় আসমা বেগম নামের এক মহিলার বারান্দায় ফেলে রেখে যায়। এ সময় অপর দুই ভাই হাছেন আলীর ডান পা এবং মহসিনের হাতের আঙ্গুল কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয় প্রতিপক্ষ। সকালে হাছেন আলীকে হাসপাতালে আনার পথে তার মৃত্যু হয়। অপর আহত ছোট ভাইকে গুরুতর আহতাবস্থায় রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিহত মোজাফফরের স্ত্রী রাবিয়া বেগম জানান, গভীর রাতে ইউনুছ আলী ও তার লোকজন আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। এ সময় তার দুই ভাই আমার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। নির্বাচনের পর থেকেই আমার স্বামীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ২ নম্বর ডাহিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএম আবুল কালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্তমান ইউপি সদস্য ইউনুস আলীর সঙ্গে মোজাফফর হোসেনের পূর্ব বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জের ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে। সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মণ্ডল জানান, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে কী কারণে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বিস্তারিত পরে বলা যাবে।
