রবিবার, ৭ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভাড়াটিয়াকে আইডি নম্বর দেবে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে ভাড়াটিয়াদের জন্য ডিজিটাল ডাটাবেজ হচ্ছে। প্রত্যেক ভাড়াটিয়াকে পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে একটি করে আইডি নম্বর। ওই ভাড়াটিয়া বাসা বদল করলেও সে তথ্য পুলিশের কাছে থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। গতকাল ডিএমপি সদর দফতরে মহানগর পুলিশের ওয়েবসাইটের ‘রিলঞ্চিং’ অনুষ্ঠানে নগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে  নগরবাসীর সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি পুলিশের হাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হলে তা জানানোর অনুরোধও জানান তিনি। ডিএমপি কমিশনার জানান, ভাড়াটিয়াদের যে তথ্য বাড়িওয়ালা দেবেন, পুলিশ তা সংরক্ষণ করবে। সে অনুযায়ী প্রত্যেক ভাড়াটিয়ার একটি আইডি নম্বর থাকবে। এখন তথ্য আদান-প্রদানে কোনো বাধা থাকবে না। এ জন্য জনস্বার্থেই ডিএমপির ওয়েবসাইটের রিলঞ্চিং করার উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের একটি ধাপ। এই সাইটে পুলিশের বিভিন্ন জোনের কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর, বিট পুলিশিংয়ে যারা কাজ করবেন তাদের ফোন নম্বর, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেতে করণীয় বিভিন্ন ধাপসহ নানা তথ্য রয়েছে। সাইটে ঢুকলে ডিএমপির নিউজ পোর্টাল ও ফেসবুক পেজে সরাসরি চলে যাওয়া যাবে। নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি মহল্লায় পর্যায়ক্রমিকভাবে “ব্লক রেইড” দেওয়া হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য সন্ত্রাসীরা যেন বাসা ভাড়া নিয়ে নাশকতা বা কোনো ধরনের অপতত্পরতা চালাতে না পারে। তবে কোনো হয়রানির শিকার হলে সেটিও নজরে আনুন। জনগণকে নিরাপত্তা দিতে কাজ করছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে কাজ করছি। কিন্তু এতে সাধারণ জনগণ যেন বিড়ম্বনার শিকার না হন, হয়রানির শিকার না হন, অবশ্যই তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দেখব। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণকে হয়রানি বা বিড়ম্বনার শিকার করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কমিশনার বলেন, ‘ইতিমধ্যে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, মেসগুলোতে পুলিশ অভিযান চালানোর কারণে বাড়িওয়ালারা ব্যাচেলরদের ভাড়া দিতে চাইছেন না। এ ক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হলো, ইতিমধ্যে পুলিশকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ব্লক রেইড দেওয়ার সময় যেন জনগণ কোনোভাবেই হয়রানির শিকার করা না হয়। যদি তারা ন্যাশনাল আইডি দেখাতে পারে এবং যে কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে পড়ে বা যেখানে কাজ করে তার আইডি কার্ড দেখাতে পারে, তাহলে কোনোভাবেই যেন তাদের হয়রানি না করা হয় সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ব্যাচেলরদের ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তবে বাসা ভাড়া দেওয়ার সময় তাদের পরিচয় জানুন। ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি নিন। যেখানে কাজ করেন তার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিন, এক কপি ছবি নিন। তাদের তথ্য নিকটস্থ থানায় জানান। সেগুলো পুলিশ ভেরিফাই করবে, তাদের প্রিভিয়াস কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে কি না সেগুলে খুঁজে দেখা হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দিদার আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, যুগ্ম-কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় ও মফিজ উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কমিশনার গণমাধ্যমে কর্মীদের বলেন, জঙ্গি-সংক্রান্ত, বিশেষ করে প্রকৌশলী হাসনাত রেজা করিম ও তাহমিদ খানের বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর জঙ্গিদের বাসা ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চালানোর বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। গুলশানের হামলাকারীদের তথ্য না রেখে বাসা ভাড়া দেওয়ার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং শেওড়াপাড়ার এক বাড়ির মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে কল্যাণপুরের জাহাজ বিল্ডিংয়ের মালিকের স্ত্রীকেও। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ির মালিকরা ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দিতে চাইছেন না বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

সর্বশেষ খবর