মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

কেন্দ্রে দাপট হারালেন রাজশাহীর মিনু নাদিম

কাজী শাহেদ

কেন্দ্রে দাপট হারালেন রাজশাহীর মিনু নাদিম

রাজশাহী আগের কমিটিতে মিজানুর রহমান মিনু ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব। নাদিম মোস্তফা ছিলেন বিশেষ সম্পাদক। কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাজশাহীর এই দুই প্রভাবশালী নেতা সম্মানজনক পদ পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার কার্যত তাদের স্থান হয়নি কেন্দ্রে। গুরুত্বহীন পদ পেয়েছেন নাদিম মোস্তফা। ফলে দলীয় রাজনীতিতে এ দুই নেতা এবার কোণঠাসা হয়ে পড়বেন বলে মনে করছেন অনেকে।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে নাম নেই বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ও নগর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর। তাকে রাখা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে। ফলে বিএনপির রাজনীতিতে এ দুই নেতা এবার কোণঠাসা হয়ে পড়বেন বলে মনে করছেন অনেকে। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে নাম নেই বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ও নগর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর। তাকে রাখা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে। ফলে বিএনপির রাজনীতিতে এবার কোনো প্রভাব থাকছে না বিএনপি নেতা মিনুর। অন্যদিকে বিএনপির বিশেষ সম্পাদক (বিশেষ দায়িত্বে) ও জেলা বিএনপির সভাপতি নাদিম মোস্তফাকেও পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। তাকে রাখা হয়েছে নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে। তাদের তুলনায় রাজশাহী অঞ্চলের অনেক নবীন ও প্রবীণ মুখ জায়গা করে নিয়েছেন কমিটিতে। ফলে এই দুই নেতা দলীয় রাজনীতিতে এবার কোণঠাসা হয়ে পড়বেন বলে মনে করছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

তবে কমিটি ঘোষণার পর থেকে ক্ষোভ জানিয়ে আসছেন মিনু ও নাদিমের সমর্থকরা। তাদের মতে, এ কমিটির মাধ্যমে রাজশাহীর নেতাদের অপমান করা হয়েছে। প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও এই দুই নেতাও ক্ষুব্ধ সম্মানজনক পদ না পাওয়ায়। বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরেই ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন মিজানুর রহমান মিনু ও নাদিম মোস্তফা। নগর বিএনপির কোনো কাজই হয়নি মিনুর সিদ্ধান্ত ছাড়া। অন্যদিকে জেলার রাজনীতিতে মিনুর মতোই প্রভাব ধরে রেখেছিলেন নাদিম মোস্তফা। কমিটি গঠন থেকে শুরু করে পৌরসভা, ইউপি, উপজেলা ও জাতীয় নির্বাচনেও মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল এই দুই নেতার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে তাদের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের কথা মাঠপর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কানেও ছিল। অন্যদিকে তাদের সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে তেমন কোনো ভূমিকাও ছিল না। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও ছিল চরম ক্ষুব্ধ। ইতিমধ্যেই রাজশাহীর রাজনীতির মাঠে নতুন আভাস, এবার মিনুকে নগর বিএনপির সভাপতি এবং নাদিম মোস্তাফাকে জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকেও সরানো হবে। এক নেতার এক পদ কার্যকর হলে সেই আভাস শিগগিরই চূড়ান্ত পরিণতি পাবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির একাধিক নেতা। নতুন কমিটিতে বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত হওয়া মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তিনি সাবেক নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নগর যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। এ ছাড়া কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে গোদাগাড়ী-তানোর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হককে। বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে একেবারেই নিস্ক্রিয় এই নেতাকে ভাইস চেয়ারম্যান করার বিষয়টিও বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিএনপির প্রবীণ নেতা সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী কবীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। তাকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহসম্পাদকের পদ পেয়েছেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। তিনি বলেন, আমি কেন্দ্রের পরিবর্তে নগর নেতৃত্বে আরেকবার থাকতে চাই। তবে দুই নেতাকে মূল্যায়ন না করা প্রসঙ্গে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। মিজানুর রহমান মিনু বলেন, দলীয় প্রধান অনেক ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি দলকে সংগঠিত করতে যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সঠিক। ব্যক্তিগত চাওয়া বলে আমার কিছু নেই। তবে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও নাদিম মোস্তফাকে পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর