বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে

—প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদরা জীবন দিয়ে জাতিকে রক্তঋণে আবদ্ধ করেছেন। তাদের রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে। এজন্য সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জনগণের সেবক হয়ে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গতকাল সকালে সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধ্বংস করতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার মাধ্যমেই তার এবং ৩০ লাখ শহীদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা জনগণের সেবক, জনগণের সেবা করব। জনগণের রক্ত, ঘামঝরা অর্থ দিয়েই তো আমাদের বেতন, ভাতা সবকিছু— এ কথাটা যেন এক ?মুহূর্তের জন্যও ভুলে না যাই।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বক্তৃতা করেন। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রী রক্তদান কর্মসূচি ঘুরে দেখেন এবং স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, মানুষের সেবার মতো শান্তি দুনিয়ায় আর কিছুতে নেই। কোনো দিন গরিব-দুঃখীর ওপর অত্যাচার করবেন না। তিনি বলেন, যে কোনো কাজ আমরা হাতে নিই না কেন তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের (সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) ওপর অনেকাংশে বর্তায়। কাজেই আপনারা আন্তরিকতার সঙ্গে সেই কাজ সম্পাদন করবেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক অধ্যায়ের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে আরও বলেন, আমাদের এই কষ্ট, দুঃখ, ব্যথা-বেদনা ভুলেও দেশের জন্য, মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করার যে চেষ্টা করে যাচ্ছি— এখানে আপনাদের সহযোগিতা সব সময় কামনা করি। দেশের সেবা করা যে কোনো সরকারি কর্মচারীর একান্ত দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার সরকারের শাসনামলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের খণ্ডচিত্র তুল ধরে বলেন, আমরা বিজয়ী জাতি, বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে গিয়েই জাতির পিতা জীবন দিয়ে গেছেন। এই ওয়াদা তিনি ৭ মার্চের ভাষণসহ বহু জায়গায় করেছেন এবং জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে সেই ওয়াদাই তিনি পালন করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, আজ আপনারা একটি মহৎ কাজ করতে যাচ্ছেন— রক্তদান। একজন রক্ত দেবেন আর একটি মানুষের জীবন বাঁচাবেন। রক্ত দিলে কোনো ক্ষতি না হয়ে শরীরের জন্য উপকার উল্লেখ করে বলেন, নিয়মিত রক্ত দিলে শরীরে নতুন রক্তকণিকা জন্মে এবং শরীর ভালো থাকে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও ৫৬-৫৭ বছর বয়স পর্যন্ত নিয়মিত রক্ত দিতেন উল্লেখ করে বলেন, তিনি দেশে ফেরার পর থেকে ১৫ আগস্ট উপলক্ষে প্রতি বছর আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচিতে নিজেও রক্ত দিয়েছেন। এখন বয়স হয়ে যাওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও আর দিতে পারেন না উল্লেখ করে বলেন, রক্ত দেওয়ার যদি ক্ষমতা থাকত তাহলে আমি এখনো রক্ত দিতে প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, যে কোনো কাজ আমরা হাতে নিই না কেন তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের ওপর অনেকাংশে বর্তায়। কাজেই আপনারা আন্তরিকতার সঙ্গে সেই কাজ সম্পাদন করবেন। মানুষের সেবা করুন, মানুষের সেবার মতো শান্তি দুনিয়ায় আর কিছুতে নেই। কোনো দিন গরিব-দুঃখীর ওপর অত্যাচার করবেন না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর