বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

মামলা তোলার চাপ দিতে মাগুরায় বাদিনী অপহরণ

মাগুরা প্রতিনিধি

বাদিনীকে অপহরণ করে যুদ্ধাপরাধ মামলা প্রত্যাহার করিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে গতকাল সদর উপজেলার গোপালগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান রাজিব ও তার বাবা আবজাল হোসেন বাঁশি মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে অপহূত বাদিনী খোদেজা খাতুনকে উদ্ধার করেছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমল হুদা জানান, সংকোচখালী গ্রামের হাসেম আলীর মেয়ে  খোদেজা খাতুন মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাবাকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে ২০০৮ সালে গোপালগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান  আবজাল হোসেন বাঁশি মিয়াসহ কয়েক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা করেন। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামি পক্ষ দীর্ঘদিন বাদিনীকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে আসামিরা কৌশলে বাদিনীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আটকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এলাকাবাসী বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানালে বুধবার সকালে অভিযুক্তদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাদিনীকে উদ্ধার এবং ওই দুজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে খোদেজা খাতুন বাদী হয়ে নাজমুল হাসান রাজিব, তার বাবা আবজাল হোসেন বাঁশি মিয়া ও মতিয়ার রহমান নামে তাদের এক সহযোগীর বিরুদ্ধে সদর থানায় নারী-শিশু নির্যাতন ও অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ বিকালে আটককৃত দুজনকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। এদিকে গোপালগ্রাম ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী জগদল ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুস জানান, ১৯৭১ সালে তার ভাই মুক্তিযোদ্ধা কাছেদ মোল্লাকে বাঁশি মিয়া ও তার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে।

এ জন্য তার বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে তিনি মামলা করেছেন। তিনি আরও জানান, ১৯৭১ সালে বাঁশি মিয়ার নেতৃত্বে রাজাকাররা শত্রুজিত্পুর ইউনিয়নের কালুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদপুর থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বিলায়েত আলী মাস্টারকে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার ছেলে সরফরাজ আলী মীর ২০০৯ সালে একইভাবে বাঁশি মিয়াসহ অন্যদের নামে আদালতে একটি মামলা করেছেন। মামলাগুলো বর্তমানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। আবদুল কুদ্দুস জানান, গোটা এলাকায় বাঁশি মিয়া ‘বাঁশি রাজাকার’ নামে পরিচিত। তিনি ও তার বাহিনী ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। তিনি বিএনপি থেকে একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। একইভাবে এবার তার ছেলেকে গোপালগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান করে পুনরায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।

সর্বশেষ খবর