রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাবুলের চাকরি নিয়ে রহস্যের জট খুলছে না

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

আলোচিত এসপি বাবুল আক্তার ও তার চাকরি নিয়ে রহস্যজট খুলছে না। তিনি এখনো কি চাকরিতে বহাল আছেন, নাকি ইস্তফা দিয়েছেন এ নিয়েও মুখ খুলছেন না কেউ। গতকাল সকালে বাবুল আক্তার তার ফেসবুকে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে মিতু ও সংসারজীবন নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেও তিনি চাকরির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। ফলে তার চাকরিতে বহাল থাকা না থাকা নিয়ে রহস্যজট আরও ঘনীভূত হয়েছে। জানা যায়, স্ত্রী হত্যার ১৮ দিন পর ২৪ জুন রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় বন্ধ রাখা হয় বাবুল আক্তারের মোবাইল ফোন। ১৫ ঘণ্টা আটক রাখার পর ফের তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাকে গভীর রাতে এভাবে নিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও পরদিন বাবুল আক্তার মামলা-সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানান। ২৬ জুন এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বাবুল আক্তার ঘটনায় জড়িত নন, তবে তাকে মামলা-সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছিল। ডিবি অফিস থেকে ফেরার পর গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন বাবুল আক্তার। ২২ জুলাই চট্টগ্রামের এক অনুষ্ঠানে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘বাবুল আক্তার চাকরিতে বহাল আছেন, তবে অফিস করছেন না। আমাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেন না। তিনি জানিয়েছেন, মানসিকভাবে ডিপ্রেসড।’ ৩ আগস্ট বাবুল আক্তার পুলিশ হেডকোয়ার্টারে গিয়ে যোগদান প্রতিবেদন দাখিল করে বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করেন। ওই দিন ডিআইজি (মিডিয়া) জানান, বাবুল আক্তার যোগদান করেছেন এটা বলা যাবে না, আবার যোগদান করেননি এটাও বলা যাবে না। একই দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজে আছে, তার যোগদানে তো কোনো বাধা দেখছি না।’ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাবুল আক্তারের চাকরিতে যোগদানের সুযোগ নেই। কারণ তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। ২৪ জুন বাবুল আক্তার চাকরি থেকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন। বাবুল আক্তারের শাশুড়ি সাহিদা মোশাররফ বলেন, ‘বাবুল যদি স্ত্রী হত্যা করত, তাহলে সে কি কখনো আমাদের বাসায় থাকত? আমরাও কি তাকে থাকতে দিতাম? মিতু খুনের পর থেকে বাবুল আক্তার দুই সন্তানসহ আমাদের বাসায়ই অবস্থান করছে। অনেক রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কখনই মেনে নেওয়া যায় না।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘জঙ্গি দমনসহ অনেক সফল ও রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারকে নিয়ে এ খেলা শেষ হবে কবে।’ প্রসঙ্গত, ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া ৫ জুলাই পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন রাশেদ ও নবী। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া মুছা ও কালু এখনো পুলিশি খাতায় ‘পলাতক’ রয়েছেন। তবে মুছার পরিবারের দাবি, প্রশাসনের লোকজন তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে।

সর্বশেষ খবর