মুদি দোকানের ব্যবসায় এখন স্বাবলম্বী মো. বদরুজ্জামান। খুলনার রূপসা উপজেলার মাছুয়াডাঙ্গা গ্রামের এই বদরুজ্জামান এক সময় খেয়াঘাটের টোলঘরে কাজ করতেন। কিন্তু বছরের সব সময় কাজ থাকত না। বেকার অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টের মধ্যে দিন পার হতো। পরের অধীনে কাজও ভালো লাগত না। তাই নিজেই কিছু করার কথা ভাবলেন। ২০১৫ সালে ‘মাছুয়াডাঙ্গা বেকারমুক্ত গ্রাম সৃজন পাইটল প্রকল্প’তে উৎসাহিত হয়ে গ্রামের মধ্যেই তিনি একটি মুদি দোকান খুলে বসেন। আর্থিক অনটনে শুরুর দিকে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকলেও ধৈর্য আর পরিশ্রমে এখন ভালোভাবেই ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন।
বদরুজ্জামানের মতো এইচএসসি পাস করে বেকার সময় কাটছিল গুলশানারা সুমির। বাবার সংসারে অভাব-অনটনের মাঝে মাত্র তিন জোড়া কবুতর দিয়ে শুরু করেছিলেন কবুতর পালন। প্রশিক্ষণ নিয়ে পাশাপাশি দরজি বিজ্ঞান ও সেলাইয়ের কাজ করছেন। এখন মাসে ৩-৪ হাজার টাকা আয়ের পাশাপাশি বিশ জোড়া বড় কবুতর রয়েছে তার। সেলাইয়ের নিপুণ হাতে তার তৈরি করা কারুকাজে সবারই মন ছুঁয়ে যায়। এমনিভাবে রূপসার নৈহাটি ইউনিয়নের মাছুয়াডাঙ্গা গ্রামের কারিমা ইয়াসমীন, গৃহবধূ আঞ্জুমানারা বেগম, সাজিনুর বেগম, কামরুল হাসান কাজল, সোহরাব হোসেন ছাড়াও বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়েছেন বাকপ্রতিবন্ধী কামরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সুকজান বিবিও। কামরুল ইসলাম বোবা হলেও আর্ট করে এবং স্ত্রী সুকজান বিবি দরজির কাজ আর গাভী পালন করে তাদের দুই সন্তানকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। গ্রামের সবাই কোনো না কোনো কাজের মধ্য থেকে অর্থ উপার্জনে এখন সক্রিয়। গৃহবধূ আঞ্জুমানারা বেগম জানান, বাড়ির কাজের পাশাপাশি তারা দরজি সেলাইয়ের কাজ করেন। তাতে মাস শেষে জামাকাপড় বানাতে পারলে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পান। যা সংসারের ব্যয় মেটানো ও জিনিসপত্র কিনতে কাজে লাগে।