সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
ঋণ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা

রূপালী ব্যাংক পর্ষদ সভায় হাতাহাতি

আলী রিয়াজ

একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়া নিয়ে রূপালী ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। রাকিব এন্টারপ্রাইজ নামে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ছয় কোটি টাকার ঋণ পাস নিয়ে এ ঘটনা ঘটে। গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকের পর্ষদ বৈঠকে এ ঘটনার পর ঋণ পাস হয়নি। চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান হলেও ঢাকার স্থানীয় শাখায় ঋণের আবেদন করে ওই প্রতিষ্ঠানটি। প্রজেক্ট ঋণ হিসেবে চাওয়া ঋণের বিপরীতে যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে তার সবগুলোর যাচাই না করেই পর্ষদ বৈঠকে ওঠানো হয়। এটা নিয়ে পর্ষদ সদস্যদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। রূপালী ব্যাংকের একাধিক পর্ষদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রূপালী ব্যাংকের পর্ষদ বৈঠকে ৪ থেকে ৫টি প্রকল্পের ঋণ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে রাকিব

এন্টারপ্রাইজের ছয় কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি প্রজেক্ট ঋণ হিসেবে প্রথমবার এত টাকার ঋণের আবেদন করে রূপালী ব্যাংকের রাজধানীর স্থানীয় শাখায়। প্রধান কার্যালয়কেন্দ্রিক ওই শাখায় মাত্র ১৫ দিন আগে ঋণ প্রস্তাবের আবেদন করে। আবেদনে ব্যবসা বৃদ্ধির কাজে নেওয়া অর্থের জন্য মর্টগেজ চট্টগ্রামের একটি জমি দেখানো হয়। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের বিভিন্ন কাগজপত্রও জমা দেওয়া হয়। তবে কোনো কাগজের সঙ্গে এর যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন না থাকায় বোর্ডের একাধিক সদস্য আপত্তি তোলেন। পরে চেয়ারম্যান এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পুরোপুরি জানেন এবং ঋণ প্রস্তাব পাস করতে চাপ দেন। এতে কয়েকজন পরিচালক চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরিচালকরা প্রশ্ন তোলেন, চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান ঢাকায় কেন আবেদন করেছে। সেটা চট্টগ্রামের কোনো শাখায় করতে পারত। আর যেসব কাগজপত্র জমা দিয়েছে তার সত্যতা যাচাই না করে এ প্রস্তাব কেন পর্ষদ বৈঠকে ওঠানো হলো। এর কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় চেয়ারম্যান রাকিব এন্টারপ্রাইজের পক্ষে নথিপত্র দেখেছেন বলে বৈঠকে জানান। ব্যাংকের যাচাই প্রতিবেদন না করে একজন সদস্যের জানা কোনো প্রকল্পে অর্থায়ন করা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সবাই পাস না করার পক্ষে বক্তব্য দেন। এতে চেয়ারম্যানের পক্ষে থাকা দুই তিনজন পরিচালক অন্য সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পরিচালক বলেন, তাদের একজন পরিচালক আরেকজনের কলার ধরতে উদ্ধত হন। পরে অন্যরা বাধা দেন। এরপর কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে চেয়ারম্যানের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এ বিষয়ে জানতে রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেনকে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হাতাহাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে রাকিব এন্টারপ্রাইজ চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার স্থানীয় শাখায় ঋণ আবেদন করায় কয়েকজন পরিচালক চট্টগ্রামের কোনো শাখায় করার জন্য বলেছেন। তাদের কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা সেটা নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সর্বশেষ খবর