বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

কাপ্তাই হ্রদে মাছের বাম্পার আহরণ

অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ

রাঙামাটি প্রতিনিধি

কাপ্তাই হ্রদে মাছের বাম্পার আহরণ

অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে কাপ্তাই হ্রদে মাছের বাম্পার আহরণ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর মাছ আহরণের ক্ষেত্রে রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। একই সঙ্গে মত্স্যজীবীদের মধ্যে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। সাড়ে তিন মাস বেকার থাকার পর মাছ ধরা উন্মুক্ত হওয়ায় জেলেরাও আছে স্বস্তিতে। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় জেলেরা পূর্ণোদ্যমে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু করেছে।

রাঙামাটি বিএফডিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিএফডিসির তিনটি মত্স্য আহরণ কেন্দ্রে ৯৫৮৮.৫৫ মেট্রিক টনের অধিক মাছ আহরিত হয়েছে। আর রাজস্ব আদায় হয়েছে ১০ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। শুধু ২০১৬ সালের বন্ধকালীন সময়ের পর প্রথম কাপ্তাই হ্রদ থেকে মাছ আহরিত হয় প্রায় ১৪৬ মেট্রিক টন। কিন্তু ২০১৪ সালে মত্স্য আহরণ শুরুর প্রথম দিন মাত্র ১২২ মেট্রিক টন মাছ আহরিত হয়েছিল। বাংলাদেশ মত্স্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি জেলা ব্যবস্থাপক কমান্ডার (সি) বিএন মো. মাইনুল ইসলাম জানান, কাপ্তাই হ্রদে বন্ধকালীন সময়ে মা ও পোনা মাছ অবৈধভাবে আহরণ ও পাচার রোধে কাপ্তাই হ্রদে প্রথমবার নৌ-পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছিল। তা ছাড়া বিএফডিসি জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হ্রদে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন নিশ্চিত করা হয়েছে।

ফলে প্রথম দিনেই মত্স্য আহরণে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। অন্যদিকে কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বিস্তার এবং উৎপাদন বাড়াতে সব ধরনের মাছ শিকার, আহরণ ও বাজারজাতকরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা উন্মুক্ত হয়েছে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসন এবং বিএফডিসি মাছের প্রজনন মৌসুম শেষে মাছ শিকারের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। গত ১২ মে থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল। এ সময়ে উপার্জনের বিকল্প কোনো উৎস না থাকায় হ্রদের মত্স্যজীবীরা চরম অভাব-অনটনের মধ্যে দিন যাপন করেছিলেন। এখন প্রায় লক্ষাধিক মত্স্যজীবীর জীবিকা পুনরায় সচল হয়ে উঠেছে। রাঙামাটি জেলা মত্স্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান জানান, কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন সম্পন্ন হয়েছে বিধায় প্রশাসন থেকে শর্তসাপেক্ষে জেলেদের মত্স্য আহরণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিএফডিসি রাঙামাটি জেলা দফতর থেকে লাইসেন্স গ্রহণ এবং আহরিত মাছের শুল্ক প্রদান করে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার ও আহরণ করা যাবে। একই সঙ্গে অবমুক্ত মত্স্য পোনার নিরাপত্তা রক্ষা ও বংশবৃদ্ধির জন্য রাঙামাটি সদরের ফিশারিঘাট সংলগ্ন ২ কিলোমিটার এবং লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয় সংলগ্ন ২ কিলোমিটার হ্রদ এলাকার অভয়াশ্রমে আগের মতো কোনোরকম মাছ শিকার ও আহরণ করা যাবে না। এসব আইন যথাযথভাবে অনুসরণ এবং নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ ব্যতীত কোনোরকম মাছ ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর