শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

গ্রেফতার হয়নি আসামি, ৯ জঙ্গির লাশও হিমঘরে

কল্যাণপুরে অভিযানের এক মাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কল্যাণপুরে অপারেশন স্টর্ম-২৬ অভিযানের এক মাস পূর্ণ হলো। কিন্তু এ সংক্রান্ত মামলার এজাহারভুক্ত নয় আসামির কাউকেই এ পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। অভিযানের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত নয় জঙ্গির লাশ এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে রয়ে গেছে। নিহত জঙ্গি ও তাদের স্বজনদের ডিএনএ প্রোফাইল মিলিয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

ওই অভিযানের পর জঙ্গি আস্তানা জাহাজ বাড়ি (তাজমঞ্জিল) ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। বাড়ির সামনে সার্বক্ষণিকভাবে পাহারায় রাখা হচ্ছে দুজন করে পুলিশ। আরেকদিকে পলাতক থেকে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে উগ্রবাদী সংগঠন আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতা ভয়ঙ্কর জঙ্গি তামিম চৌধুরী, ইকবাল ও রিপনসহ এজাহারভুক্ত আসামিরা। এদের প্রত্যেকের যাতায়াত ছিল ওই বাড়িতে।

মামলার তদারক কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) এডিসি আবদুল মান্নান জানান, তদন্তে নতুন কোনো অগ্রগতি নেই। যেহেতু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই, সেহেতু এদের পেছনে কে বা কারা ছিল— তা বলা সম্ভব হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই দিবাগত রাতে কল্যাণপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নয় জঙ্গি নিহত হয়। ঘটনার পর রাকিবুল হাসান রিগ্যান (গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার), ইকবাল, তামিম চৌধুরী, রিপন, খালেদ, মামুন, মানিক, জোনায়েদ খান ও বাদলসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ। আস্তানা থেকে পালিয়ে যায় জঙ্গি ইকবাল। ঘটনার পর থেকে ‘জাহাজ বাড়ি’ নামে পরিচিত সেই ভবনটি পুলিশি পাহারায় রয়েছে। তবে বাসার মালিকের স্ত্রী মমতাজ বেগমকে ৫৪ গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। গ্রেফতার রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় তামিম চৌধুরী, রিপন, খালিদ, মামুন, মানিক, জোনায়েদ খান, বাদল ও আজাদুল ওরফে কবিরাজ নামে ব্যক্তিরা নিয়মিত যাতায়াত করত। তারা তাদের ধর্মীয় ও জিহাদি কথাবার্তা বলে উদ্বুদ্ধ করত। প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা দিয়ে যেত।

ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, কল্যাণপুরের বাসায় যাতায়াতকারী সবাই আনসার আল ইসলামের শীর্ষপর্যায়ের নেতা। এদের মধ্যে তামিম চৌধুরীর নাম বেশি আলোচিত হলেও পলাতক জঙ্গি রিপন বেশি দুর্ধর্ষ। রিপন কিছুদিন আগে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে গেছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। তামিম চৌধুরীসহ অন্য জঙ্গিরা দেশেই আছে। এরা কেউ প্রযুক্তি ব্যবহার না করায় ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রযুক্তির পাশাপাশি ম্যানুয়াল সোর্সের মাধ্যমে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর