শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

নাজমুল হুদার কর্মচারী খুনে চারজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃণমূল বিএনপির প্রধান ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার ব্যক্তিগত কর্মচারী আমিনুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার কারণে বলে স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃতরা। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে আমিনুলকে গলাকেটে হত্যার এই কারণ জানিয়েছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম। আমিনুল হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে শফিকুল ইসলাম অরণ্য, তার স্ত্রী মেহজাবীন ইসলাম মুন, শাশুড়ি মৌসুমি ইসলাম জ্যোত্স্না ও খালা শাশুড়ি শিউলীকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত রক্তমাখা চাপাতি, একটি মোটরসাইকেল ও রক্তমাখা একটি শার্ট উদ্ধার করা হয়।

মনিরুল ইসলাম জানান, আমিনুল গৃহশিক্ষক ছিলেন মুনের। প্রায়ই আমিনুল মুনকে ধর্ষণ করতেন। পরে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র রয়েছে জানিয়ে মুনকে একাধিবার পাশবিক নির্যাতন করেন। মুনের মা মৌসুমি ইসলাম জ্যোত্স্না বিষয়টি জেনে আমিনুলকে কাজে বাধা দেন। একপর্যায়ে মুনকে বিয়ে করে শফিকুল ইসলাম অরণ্য। পরে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশের হুমকি দিয়ে অরণ্যের স্ত্রী ও শ্যালিকার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয় আমিনুল। এ প্রস্তাবটি অরণ্য জানতে পেরে ১৯ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জ্যোত্স্নার ভাড়া বাড়িতে বসে আমিনুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন গ্রেফতারকৃতরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন জ্যোত্স্না ও শিউলি আমিনুলকে মুনের সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে অটোরিকশায় কেরানীগঞ্জের দিকে নিয়ে যান। এ সময় পেছন থেকে মোটরসাইকেলে তাদের অটোরিকশা অনুসরণ করেন অরণ্য। মুরাদনগর এলাকায় পৌঁছালে পেছন দিক থেকে অরণ্য আমিনুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। পরে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে সপরিবারে হাটহাজারিতে পালিয়ে যায় তারা। এ ঘটনার পর পুলিশ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, গত শনিবার সকাল ১০টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমদি বাবুরায়পাড়া থেকে আমিনুলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুর এলাকার আলামিন মঞ্জিলের একটি ফ্লাটের ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদী থানার গোলাই ভাঙ্গা গ্রামে। এ ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নিহতের বড় ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে মামলাটি তদন্ত করেন এসআই শরিফুল ইসলাম সোহাগ।   গ্রেফতারকৃতদের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় নিহতের বড় ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। আসলে তারা আদম বেপারী। তাদের কাছে আমার ভাই টাকা পেত, তাই তারা কিলার দিয়ে তাকে হত্যা করেছে। সূত্র জানায়, আমিনুল ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার ব্যক্তিগত কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন সকালে পুলিশ তাদের খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন তারা।

সর্বশেষ খবর