শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম
দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচন

স্বতন্ত্র স্বাক্ষর লাগবে ২৫০ ভোটারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় ২৫০ ভোটারের স্বাক্ষর সংগ্রহের বিধান করছে নির্বাচন কমিশন—ইসি। এ ক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের বাইরে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন, তাদের জন্য ২৫০ ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রাখার এই প্রস্তব করা হচ্ছে। বুধবার নির্বাচন বিধিমালা সংশোধন ও আচরণবিধি চূড়ান্তের বিষয়ে কমিশন সভায় এ বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি মিলেছে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনে আইনের আলোকে ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার বিধি সংশোধন হয়েছে। সিটি করপোরেশনের বিধিও চূড়ান্ত হয়েছে। এখন উপজেলা বিধি দুটির খসড়া চূড়ান্ত করার প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। কমিশন সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবে বলে জানিয়েছেন ইসির আইন শাখার যুগ্মসচিব মো. শাহজাহান। ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের সর্বশেষ সাধারণ ভোট হলেও দলভিত্তিক ভোটের জন্য আইন সংশোধনের পর বিধি করতে না পারায় কিছু উপজেলার ভোট আটকে রয়েছে। বিধিমালা সংশোধনের পর মেয়াদোত্তীর্ণ এসব উপজেলায় ভোট হবে বলে জানান তিনি। বর্তমান বিধি অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দুটি ভাইস চেয়ারম্যান (সাধারণ ও সংরক্ষিত) পদে প্রার্থীকে রাজনৈতিক দলের মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হয়। দলীয় মনোনয়নে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরকারের সম্মতি পাওয়ার পর গত বছরের নভেম্বরে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের ভোট দলভিত্তিক করতে আইন সংশোধন করা হয়। এরপর ওই বছরের ডিসেম্বরে পৌরসভার মেয়র পদ ও মার্চ-জুন পর্যন্ত ইউপির চেয়ারম্যান ভোট দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হয়।

পৌর মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১০০ ভোটারের সমর্থন লাগলেও ইউপিতে এ শর্তটি বাদ দেওয়া হয়। আর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ৩০০ ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়। পৌরসভার চেয়ে উপজেলা পরিষদের আয়তন ও ভোটার বেশি হওয়ায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় ২৫০ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত সমর্থন তালিকা জমা দেওয়ার নতুন প্রস্তাব করা হয়েছে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ইসির যুগ্মসচিব শাহজাহান জানিয়েছেন, বিধিমালায় মনোনয়নসংক্রান্ত আরও কয়েকটি পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। পৌরসভার আদলেই উপজেলা পরিষদ আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। প্রস্তাবে দলীয় প্রার্থিতায় মনোনয়নসংক্রান্ত প্রত্যয়ন, উপজেলাপ্রতি দলীয় ব্যয়সীমা নির্ধারণ, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রতীকের তালিকায় সংশোধন আনা হচ্ছে; এ ছাড়া সমালোচিত প্রতীকগুলোও সংরক্ষিত পদের জন্য রাখা হচ্ছে না, বলেন তিনি। সংশোধিত বিধিমালার প্রস্তাবে প্রার্থীর জন্য ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয়ের সুযোগ ও বিধি লঙ্ঘনের দায়ে দলকে একই পরিমাণ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি মন্ত্রী ও সমমর্যাদার ব্যক্তি, মেয়র, সংসদ সদস?্যসহ সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। উপজেলায় তিনটি পদে নির্বাচন দলীয়ভাবে হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যালট পেপার ছাপানোর চ্যালেঞ্জ থাকবে ইসির কাছে। কয়েক ধাপে ভোট করা ছাড়াও বিকল্প থাকবে না বলে ভাষ্য ইসি কর্মকর্তাদের। নিয়ম অনুযায়ী নতুন এ প্রস্তাবের খসড়া এখন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর