রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
উদ্ভাবন

হত্যাকাণ্ড তদন্তে সহায়তা করবে ভার্চুয়াল রোবট

নিজস্ব প্রতিবেদক

হত্যাকাণ্ড তদন্তে  সহায়তা করবে ভার্চুয়াল রোবট

হত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধ তদন্তে বিচারকদের সহায়তা করতে আসছে ভার্চুয়াল প্রযুক্তির রোবট। এর মাধ্যমে আগামীতে অপরাধ সংঘটনের স্থান সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে পারবেন বিচারকরা। সংগ্রহ করতে পারবেন প্রয়োজনীয় তথ্য। এ ক্ষেত্রে তাদের আদালতকক্ষ ত্যাগ করতে হবে না। সেখানে বসেই তারা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন ক্রাইম সিন। এমনই একটি প্রযুক্তি নিয়ে বর্তমানে কাজ করছেন বাংলাদেশি গবেষক মেহযেব রহমান চৌধুরী। ব্যারিস্টার চৌধুরী ডারহাম ইউনিভার্সিটিতে ফরেনসিক সায়েন্স অ্যান্ড ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন্সে পিএইচডি গবেষক। এ বিষয়ে লন্ডনের সুপরিচিত পত্রিকাগুলোয় ফলাও করে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বখ্যাত রিসার্চ পাবলিকেশন দ্য কনভারসেশনে প্রকাশিত একটি লেখায় তার কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। এর ওপর ভিত্তি করে লন্ডনের ডেইলি মেইল, বিজনেস ইনসাইডারসহ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের একাধিক মিডিয়া। ডেইলি মেইলের শিরোনাম ‘ভার্চুয়াল রিয়েলিটি রোবটস কুড সামডে টেলিপোর্ট জুরিস টু গ্রুসাম ক্রাইম সিন্স টু ইনভেস্টিগেট মার্ডারস’। সাধারণত অপরাধ সংঘটনের স্থান পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয় না বিচারকদের। এমন অনুমোদনের ঘটনা বিরল। প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনে বিচারকদের এভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে রয়েছে সম্ভাব্য লজিস্টিক্যালসহ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু দ্রুত যেভাবে প্রযুক্তি এগোচ্ছে তাতে ৩৬০ ডিগ্রি ছবি ধারণ, রোবটিক ও কৃত্রিম গোয়েন্দা ব্যবহার করে এমন সব ইস্যু মোকাবিলা করা যাবে বলে বলেছেন চৌধুরী। এমন সব ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিই হতে পারে প্রকৃত জবাব। দ্য কনভারসেশনে তিনি তুলে ধরেছেন যে, একদিন আমরা বিচারকদের ও জুরি বোর্ডকে, আদালতকক্ষ ত্যাগ না করেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ঘটনাস্থলে পাঠাতে পারব। এভাবে যদি অপরাধের স্থানে বিচারকদের পাঠানো যায় তাহলে তাতে প্রসিকিউশন ও বিবাদীপক্ষের মামলায় জুরিদের জন্য সহায়ক হবে। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মেহযেব চৌধুরী ও তার সহকর্মীরা নাসার মার্স কিউরিওসিটি রোভারের আদলে একটি রোবট সিস্টেম তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে অপরাধ সংঘটনের স্থলে ইমারসিভ ভিডিও ফুটেজ ধারণ করা সম্ভব হবে। এই ম্যাব-ম্যাট রোবট ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ভিডিও ও ফটোগ্রাফ ধারণ করতে পারবে, যে কোনো কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে একটি সঠিক অ্যাপের মাধ্যমে চালানো যাবে। ১০ ডলার মূল্যের গুগল কার্ডবোর্ডের মতো একটি সাধারণ অ্যাডাপ্টর হেডসেটের মাধ্যমে, এটি একই ধরনের উচ্চমাত্রার ভিআর এক্সপেরিয়েন্স সৃষ্টি করতে পারে অনেক কম খরচে। এর মাধ্যমে ৩ডি গ্রাফিক্সের কোনো রেন্ডারিংয়ের প্রয়োজন নেই। কোনো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার দরকার পড়বে না। পাশাপাশি এটি প্রত্যেক অ্যাঙ্গেল থেকে অপরাধের ঘটনাস্থলের সবচেয়ে সঠিক স্ন্যাপশট ধারণ করতে পারবে। ব্যবহারকারীরা তাদের মাথা ঘোরাতে পারবেন, ওপরে ও নিচে দেখতে পাবেন, ছবি বড় বা ছোট করতে পারবেন। মনে হবে যেন তারা ক্রাইম সিনেই অবস্থান করছেন। আদালতকক্ষে জুরিদের সহায়তা করার পাশাপাশি এ সিস্টেম তদন্তকারীদেরও ঘটনাস্থল পুনঃপরিদর্শনের সুযোগ করে দেবে, ঠিক যেমনটা তারা প্রাথমিক ময়নাতদন্তের পরীক্ষায় পেয়েছিলেন। চারদিক থেকে তথ্য ধারণ করা যাবে। সবকিছুতে খরচ হবে মাত্র ২৯৯ পাউন্ড।

সর্বশেষ খবর