বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

আশ্রয়দাতাদেরও শাস্তি হবে

যুদ্ধাপরাধীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আশ্রয়দাতাদেরও শাস্তি হবে

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে মন্ত্রী বানিয়েছেন, তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধের দায়ে সেসব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হয়েছে, রায় কার্যকর হয়েছে। তাই তাদেরও (আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা) কী শাস্তি হবে, তা আজ ভাবতে হবে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে একজন আইনজীবী কীভাবে দাঁড়ায় সেটা আমার অবাক লাগে। শুধু অর্থকড়িই কি সব? এদের পক্ষে কথা বলে, আবার বলে সরকার পরিবর্তন হলে নাকি তারা ব্যবস্থা নেবে! তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে তারা চেনেনি, এদের ব্যবস্থা বাংলার জনগণই নেবে। রাজাকারের দোসর হিসেবে এদের বিচার হবে। জঙ্গিদের নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মায়াকান্না করছেন অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিদের পক্ষ নিয়ে খালেদা জিয়া বলছেন তাদের বাঁচিয়ে রেখে কেন শিকড়ের সন্ধান করা হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিকড়ের সন্ধান করা লাগবে না। খালেদা জঙ্গিদের মদদ দেন, কাজেই শিকড় যে সেখানে সেটা খুঁজে দেখার আর প্রয়োজন পড়ে না। জঙ্গিদের বাঁচিয়ে রাখলে কী করবে খালেদা?  যারা যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে তাদের বিচারের জন্যে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, লাখো শহীদের রক্ত যারা নিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের মন্ত্রী বানিয়েছেন, তাদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছেন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। যারা গণহত্যাকারী যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানায়, গাড়িতে পতাকা তুলে দেয় তাদের কী শাস্তি হবে আজ তা ভাবতে হবে। তাদের বিচার জনগণের সামনে প্রকাশ্যে হতে হবে। এ জন্য জনমত গড়ে তুলতে হবে।  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে হেদায়েতুল ইসলাম স্বপনের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ, দক্ষিণ ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও সাদেক খান। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর জিয়া ক্ষমতা দখল করে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা হন? নামে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আবার একখানা খেতাবও পেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। আবদুল আলীম যে নাকি জয়পুরহাটে একসঙ্গে ১৫৭ জনকে হত্যা করে তাকেও মন্ত্রী বানিয়েছেন। গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনেছেন। তার স্ত্রী খালেদা জিয়া গোলাম আযমকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়ে নাগরিকত্ব দিয়েছেন। আরেক যুদ্ধাপরাধী আবদুল মান্নানকে জিয়া তার উপদেষ্টা বানিয়েছেন। সংবিধান পরিবর্তন করে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাহলে জিয়া কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা হলেন?  আর তার স্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়েছেন। অপরাধ যে করে, আর যে সয় উভয়ে সমান অপরাধী। আমি জানি না আমাদের জ্ঞানী-গুণী বুদ্ধিজীবীরা কখনো এ কথা বলবেন কিনা।

সর্বশেষ খবর