বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভালোবাসা শ্রদ্ধায় কবিকে বিদায়

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

ভালোবাসা শ্রদ্ধায় কবিকে বিদায়

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর। সেখানে ফুলের চাদরে শায়িত কবি শহীদ কাদরীর মরদেহ। শত সহস্র নারী-পুরুষ আর ভালোবাসার মানুষ জড়ো হয়েছিল। বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় তারা শেষ অভিবাদন জানিয়েছেন কাঠফাটা রোদে সারিবদ্ধ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে। শোকের ব্যানারে শোভা পাচ্ছিল ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয় কবি, শহীদ কাদরীর প্রতি জাতির শ্রদ্ধাঞ্জলি’। তখন মনে হয়েছে কবিতা লিখতে লিখতে ক্লান্ত হয়ে কবি যেন পুষ্প উদ্যানে বিশ্রামে বিভোর।

কিন্তু এ বিশ্রাম ছিল অনন্তকালের। গতকাল সকালে কবি শহীদ কাদরীর শেষ বিদায়ক্ষণে শহীদ মিনার জুড়ে এমনই প্রেক্ষাপট বিরাজ করছিল। বুদ্ধিজীবী, কবি-সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, শিল্পানুরাগী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষকসহ দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কবিকে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানিয়েছেন। এরপর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। এর আগে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে কবির মরদেহ। অন্য একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশ আসেন কবির স্ত্রী নীরা কাদরী ও ছেলে আদনান কাদরী। বিমানবন্দরে সরকারের পক্ষ থেকে মরদেহ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন বীরবিক্রম ও বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, কবি আবুল হাসনাত প্রমুখ। বিমানবন্দর থেকে শহীদ কাদরীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কবির বড় ভাই শাহেদ কাদরীর বারিধারার বাসায়। সেখানে আত্মীয়স্বজনরা কবিকে শেষ বিদায় জানান। এরপর বেলা সোয়া ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয় মরদেহ। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সেখানে সোয়া ১২টা পর্যন্ত রাখা হয়। ব্যক্তিগত, সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কবিকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন বীরবিক্রম ও বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের ফুলেল শ্রদ্ধার মধ্য দিয়েই শুরু হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি পর্ব। আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনিসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, বাংলা একাডেমি, ছায়ানট, শিল্পকলা একাডেমি, উদীচী, রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, খেলাঘর, জাতীয় কবিতা পরিষদ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, পথনাটক পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, যুব মৈত্রী, ঢাকা থিয়েটার, গ্রাম থিয়েটার, ঢাকা পদাতিক, ঋষিজ, রাইটার্স ক্লাব, আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোট, যাত্রা শিল্পী উন্নয়ন পরিষদ প্রভৃতি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। ব্যক্তিগতভাবে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত, কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, হারুন হাবীব, শিল্পী আবুল বার্ক আলভী, মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, অধ্যাপক আহমেদুল কবির, দিলারা হাফিজ, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, আবু সালেহ, আনিসুল হক, সাজ্জাদ শরীফ, কবি সাজেদ কামাল, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি নাসির আহমেদ প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর