শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চা উৎপাদনে ১৬২ বছরের রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

চা উৎপাদনে ১৬২ বছরের রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা

বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে অন্যতম চা। একসময় চা রপ্তানি করে আয় হতো প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু দিন দিন দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা বৃদ্ধি ও উৎপাদন কমে যাওয়ায় রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়ে সম্ভাবনাময় এই পণ্য। তবে নানা সংকট, সমস্যা সত্ত্বেও কয়েক বছর ধরে দেশে চায়ের উৎপাদন বেড়েই চলেছে। এ বছর রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনেরও সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা না দিলে এ রেকর্ড ১৬২ বছরের উৎপাদনকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন তারা। জানা যায়, চা থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, কুয়েত, ওমান, সুদান, পাকিস্তান, ভারত, পোল্যান্ড, রাশিয়া, ইরান, আফগানিস্তান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, বেলজিয়ামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চা রপ্তানি করে। প্রতি বছর অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে ১.৩ মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এক দশক আগে নানা জটিলতায় চায়ের উৎপাদন হ্রাস পেতে থাকে। ওই সময় রপ্তানি তো দূরের কথা বাংলাদেশকে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে চা আমদানি করতে হয়েছে। তবে পরবর্তীতে নানামুখী পদক্ষেপের ফলে ক্রমেই বাড়তে থাকে চায়ের উৎপাদন। ২০১৫ সালে দেশে চা উৎপাদনের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ওই বছর দেশে ৬৭.৩৮ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। তবে সেই রেকর্ড এবার ভাঙতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের ১৬২ বছরের বাণিজ্যিক চা উৎপাদনের সব রেকর্ড ভেঙে এবার দেশে চায়ের উৎপাদন ৭০ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। গত বছর জুন পর্যন্ত দেশের ১৬২টি বাগানে চা উৎপাদন হয়েছিল ১৭.২২ মিলিয়ন কেজি। চলতি বছরের একই সময়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.৩৮ মিলিয়ন কেজিতে। মৌসুম শেষে তাই চা উৎপাদনে সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টির ধারণা ক্রমেই বাস্তব রূপ লাভ করছে। আর বছরের শেষ পর্যন্ত উৎপাদনের এ ধারা ঠিক থাকলে তা হবে গত ১৬২ বছরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চা উৎপাদনের রেকর্ড— এমন ধারণা পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের অধীন মৌলভীবাজার জেলার নিউ সমনবাগ চা বাগানের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহজাহান আকন্দ বলেন, গত বছর দেশে চা উৎপাদনের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছিল। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এবার সেই রেকর্ডও ভেঙে যাবে। এদিকে চা শিল্পের উন্নয়নে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা বোর্ড থেকে একটি বিশেষ পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কিছু অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) দিয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশের চা শিল্প আরও এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন চা শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর