শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুলিশের এসআই ও সোর্সের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি ডাকাতি মামলার রিমান্ডে থাকা এক আসামিকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হবে না শর্তে তার দুই স্ত্রীকে আলাদাভাবে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও দুজন সোর্সের বিরুদ্ধে। তবে ধর্ষণের আগেই দাবিকৃত ২৫ হাজার টাকার মধ্যে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয় ৬ হাজার। বাকি টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই শর্ত জুড়ে দিয়ে ধর্ষণ করা হয় দুই স্ত্রীকে। ওই দুই নারী ও তাদের আইনজীবী বিষয়টি স্বীকার করলেও পুলিশের ভয়ে ও চাপে রয়েছেন। তবে অভিযুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আতাউর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করলেও হাসপাতালের ডাক্তার জানিয়েছেন, দুজন নারী এ ধরনের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন।

জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের একটি ডাকাতি মামলায় মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার ইকবালকে গত সোমবার গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি একসময় পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। গ্রেফতারের পর বুধবার নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আসামি ইকবালকে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এরপর তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।

ইকবালের বাবা এবং দুই স্ত্রী অভিযোগ করেন, রিমান্ডে নেওয়ার পর বুধবার রাতেই পুলিশের সোর্স নজরুল ইসলাম ওরফে তোতলা নজরুল ও শুভ তাদের ফোন করেন। তারা জানান, এসআই আতাউরকে ২৫ হাজার টাকা দিলে ইকবালকে রিমান্ডে মারধর করা হবে না। কথা মতো রাত সাড়ে ১০টায় ইকবালের দুই স্ত্রী একসঙ্গে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অদূরে সোর্স নজরুল ও শুভর সঙ্গে দেখা করেন। সোর্সরা তাদের নজরুলের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান।  সেখানে দুই সোর্সকে ৬ হাজার টাকা দেন তারা। বাকি টাকা দিতে না চাওয়ায় শুভ ইকবালের ছোট স্ত্রীকে ও নজরুল বড় স্ত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। তারা এতে রাজি না হওয়ায় ইকবালকে মারধর করা হবে ভয় দেখিয়ে দুটি পৃথক কক্ষে নিয়ে নজরুল ও শুভ তাদের ধর্ষণ করেন। রাত সাড়ে ১২টায় সেখানে আসেন এসআই আতাউর। তিনি ইকবালের ছোট স্ত্রীকে  ধর্ষণ করেন। তারা যাতে কাউকে ধর্ষণের বিষয়টি না বলেন এ জন্য এসআই আতাউর আরও মামলার ভয় দেখান।

গতকাল বিকালে ধর্ষণের শিকার দুই স্ত্রীকে আদালতপাড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। ওই সময় দুজনকেই বেশ অসুস্থ দেখাচ্ছিল। সন্ধ্যায় তাদের শ্বশুর দুজনকে ১০০ শয্যার নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে কর্তব্যরত ডাক্তার মামলা কিংবা জিডি ছাড়া এ ধরনের কোনো পরীক্ষা করতে অনীহা প্রকাশ করেন। কর্তব্যরত ডা. ইমন বলেন, ‘দুজন নারী এসেছিলেন। কিন্তু যেহেতু তারা থানায় কোনো অভিযোগ করেননি, তাই আমরা পরীক্ষা করতে পারিনি।’ আসামির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা মামলা করতে বলেছিলাম। তবে অব্যাহত হুমকির কারণে পরিবারটি খুবই ভয় পাচ্ছে।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে এসআই আতাউর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি মিথ্যা। আমার সঙ্গে কারও কোনো কথা কিংবা লেনদেনের আলাপ হয়নি।’

সর্বশেষ খবর