শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

দৌরাত্ম্য থামছে না জাল নোট ও চোরাচালান চক্রের

► জাল কোটি টাকাসহ ১০ জন গ্রেফতার ► অভিনব কায়দায় সোনা পাচারের সময় চোরাচালানি আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল নোট তৈরি চক্র। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর পল্টন, কোতোয়ালি ও লালবাগ থেকে এ চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন চক্রের মূল হোতা রেজাউল ইসলাম মুন্না, আবদুল কাদের অপু, লতিফ, ফজর আলী, মহরম মিয়া, সুমি বেগম, আবদুল বারেক, সাদ্দাম, আলম মিয়া ও আলমগীর। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ কোটি ১৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা, ৮ হাজার ভারতীয় রুপি ও জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে গ্রেফতারকৃতরা জাল নোট প্রস্তুত ও বিপণন করে। পশুর হাট সামনে রেখে তারা সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। এরা পেশাদার জাল টাকা প্রস্তুতকারী ও বিক্রেতা। ৭-৮ বছর ধরে চক্রটি এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তারা স্বল্পমেয়াদে বাসা ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন সিন্ডিকেট তৈরি করে নিজেরা দেশি-বিদেশি জাল নোট তৈরি করে। পরে এসব জাল নোট পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে। তিনি আরও বলেন, জাল নোট প্রস্তুত থেকে খুচরা পর্যায়ে বিতরণ পর্যন্ত তারা বিভিন্ন স্তর অবলম্বন করে এবং প্রতিটি স্তরেই রয়েছে মহিলা সদস্যসহ একাধিক সিন্ডিকেট। ইতিমধ্যে চক্রটি ২-৩ কোটি টাকা বাজারে ছেড়েছে বলে জানা গেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ৩-৪টি চক্রের তথ্য পাওয়া গেছে। এদের টার্গেট ছিল ১০ কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়া। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কেউ এ চক্রের সঙ্গে যুক্ত আছে কিনা তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। গরুর হাটসহ বড় বড় মার্কেটের সামনে জাল টাকা শনাক্তের মেশিন রয়েছে।

অজ্ঞান ও মলম পার্টির ২১ সদস্যের সাজা : ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান ও মলম পার্টির ২১ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে চেতনানাশক ট্যাবলেট, হালুয়ার কৌটা, আচার, ভেষজ চিকিৎসার বই উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মশিউর রহমান।

১৬ কেজি সোনাসহ চোরাচালানি আটক : ভারতে পাচার করার সময় সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্ত এলাকা থেকে ১৬ কেজি ৩১৬ গ্রাম সোনাসহ আলিউজ্জামান নামে এক চোরাচালানিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবির তলুইগাছা ক্যাম্প অধিনায়ক সুবেদার আবুল কাসেম জানান, গতকাল বেলা ১১টার দিকে আলিউজ্জামান মোটরসাইকেলে (সাতক্ষীরা হ ১২-৮০৫৮) করে সীমান্তের দিকে যাওয়ার সময় বিজিবি তাকে থামিয়ে তল্লাশি চালায়। এ  সময় মোটরসাইকেলের টুল বক্স খুলে ১৬ কেজি ৩১৬ গ্রাম সোনা পাওয়া যায়। এর দাম প্রায় ৬ কোটি টাকা। পরে আলিউজ্জামান বিজিবিকে জানিয়েছে, ‘সে এই সোনার বাহক মাত্র। কলারোয়ার কেড়াগাছির সোনা চোরাচালানি মহিদুল মেম্বর, রুস্তম আলি ও ফিরোজ হোসেন তার কাছে সকালে এই সোনা ভারতে পার করে দেওয়ার জন্য দিয়েছেন। এ জন্য মজুরি বাবদ কেড়াগাছি ইউপি মেম্বর মহিদুল তাকে এক হাজার টাকাও দিয়েছেন।’ তবে বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জানান, এই সোনা চোরাচালানের সঙ্গে কারা জড়িত সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর