শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

এবার দেশি গরুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা!

প্রতিদিন ডেস্ক

এবার ভারতীয় গরু আমদানি কম হলেও কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় পশু দিয়েই এবার মেটানো হবে কোরবানির চাহিদা। এ কারণে বাজারে দাম বাড়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। তবে হাটগুলোতে আকাশছোঁয়া দাম হাঁকায় বেচা-বিক্রি নেই বললেই চলে। সবার নজর সীমান্তের দিকে। নিজস্ব প্রতিবেদকদের পাঠানো খবর। চট্টগ্রাম : এবার কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না। তবে প্রশাসনের ‘টেনশন’ অবৈধ বাজার নিয়ে। চট্টগ্রামে চার লাখ ৯১ হাজার ৭০৫টি পশু মজুদ আছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে কোরবানির পশু জবাই করা হয় চার লাখ ৮৬ হাজার। ২০১৫ সালে জবাই করা হয় চার লাখ ৯৩ হাজার। স্থানীয় পশু দিয়ে ৯০ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর চট্টগ্রাম মহানগরের তিন থানা এবং ১৪ উপজেলায় ব্যক্তিগতভাবে পালন করা ও খামারি পশু আছে চার লাখ ৯১ হাজার ৭০৫টি। এর মধ্যে গরু তিন লাখ ৩৬ হাজার, মহিষ ৩৭ হাজার ৭৪০, ছাগল ৮৯ হাজার ৬৬৫ ও ভেড়া ২৮ হাজার টি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, দুই বছর চট্টগ্রামের স্থানীয় পশু দিয়ে ৯০ শতাংশ চাহিদা জোগান দেওয়া হতো। আশা করছি, এ বছর ৯৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। তাই কোরবানির পশুর কোনো সংকট বা দাম বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নেই। রাজশাহী : কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রাজশাহীর পশুর হাটগুলো এখনো জমে উঠেনি। আগামীকাল থেকে হাটগুলো জমে উঠবে। হাটে এবার দেশি গরুর আমদানি অনেক বেশি হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এবারের কোরবানি পশু চাহিদার তুলনায় ৭০ হাজার ৬৮৪টি বেশি মজুদ আছে। তারপরেও এখন পশু হাটগুলোতে দাম চড়া। রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী জেলায় ৩ লাখ ২৩ হাজার ৬৮৪টি পশু আছে। এর মধ্যে গরু ৫৪ হাজার, ছাগল ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫০টি, মহিষ এক হাজার ২৩৪টি ও ভেড়া ১৪ হাজার। জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা দুই লাখ ৫৩ হাজারের মতো। চাহিদার চেয়ে আরও বেশি সংখ্যক পশু জেলায় মজুদ আছে। এ ছাড়াও এসব পশুর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সীমান্ত থেকে আসা ভারতীয় গরু। রাজশাহী কাস্টম ও এক্সসাইজ ভ্যাট কমিশনার ড. আবদুল মান্নান সিকদার বলেন, প্রতিদিন রাজশাহী অঞ্চলের ৯টি করিডোরে দেড় থেকে ২ হাজার গরু-মহিষ ছাড়পত্র নেয়। জুলাই মাসে ৯টি করিডোরে ৪০ হাজার ৮৬৫টি গবাদি পশু ছাড়পত্র নেয়। পশু বেশি মজুদ থাকলেও কোরবানির হাটগুলোতে পশুর দাম আকাশ ছোঁয়া। হাটগুলোতে ছোট আকারের গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার, মাঝারি ৫০ থেকে ৭৫ হাজার, বড় গরু ৮০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। এদিকে হাটগুলোতে গরুর পাশাপাশি ছাগলের দামও চড়া। ছোট ছাগল ৮ থেকে ১০ হাজার, মাঝারি ১২ থেকে ২০ হাজার ও বড় ছাগল ২২ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

দাম বেশি হওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আশা পাইকারি ক্রেতা থেকে শুরু করে অন্য ক্রেতারা গরু বা ছাগল কিনতে গিয়ে হতাশায় পড়েন। পশু কিনতে বাজেটের সীমারেখাটা আরও বেশি লম্বা করতে হচ্ছে। রাজশাহী সিটি হাটে গরু কিনতে আসা ঢাকার ব্যবসায়ী জমশেদ আলী জানিয়েছেন, প্রয়োজনের তুলনায় ভারতীয় গরু হাটে আমদানি কম। দেশি গরুর আমদানি বেশি হলেও দাম চড়া। তার মতে, গত বছরের তুলনায় এবার শুরুতেই গরু প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। কাটাখালীর হাটের ইজারাদার আশের আলী জানান, ভারত থেকে গরু না এলেও কোনো সমস্যা হবে না। দেশি প্রচুর গরুর মজুদ আছে। তাতেই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। বরিশাল : ঈদ উপলক্ষে বরিশাল নগরীতে ৭টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমতি দিয়েছে সিটি করপোরেশন। গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া হলেও এসব স্থানে পশুর হাট প্রস্তুত করার কাজ চলছে কয়েক দিন ধরে। ৭টি অস্থায়ী এবং ২টি স্থায়ীসহ এবার নগরীতে কোরবানির পশুর হাট বসবে ৯টি। বরিশাল সিটি করপোরেশনের হাট-বাজার শাখার তত্ত্বাবধায়ক মো. নূরুল ইসলাম জানান, গত বছর বরিশাল নগরীতে ৫টি অস্থায়ী এবং ২টি স্থায়ীসহ মোট কোরবানির পশুর হাট বসেছিল ৭টি। এবার নগরীতে অস্থায়ী পশুর হাট বেড়েছে ২টি। ৭টি অস্থায়ীসহ মোট পশুর হাট বসবে ৯টি। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব হাটে কোরবানির পশু বেচা-কেনা হবে। অস্থায়ী পশুর হাট বসবে নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলীর মোল্লাবাড়ী মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠ এবং একই ওয়ার্ডের রূপাতলী বীর মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, ২৫ নং ওয়ার্ডের উকিলবাড়ী সংলগ্ন মাঠ, আমানতগঞ্জ টিবি হাসপাতাল মাঠ, কাউনিয়া টেক্সটাইল বালুর মাঠ, নবগ্রাম রোডের যুবক হাউজিং মাঠ ও কালুশাহ সড়কে। এ ছাড়া নগরীর বাঘিয়ায় এবং পোর্ট রোড এলাকায় স্থায়ী পশুর হাটেও বেচা-কেনা হবে কোরবানির পশু।

সর্বশেষ খবর