শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁঁকে ইলিশ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁঁকে ইলিশ

কুয়াকাটায় আড়তে গতকাল স্তূপ করা ইলিশ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

কুয়াকাটা-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। গত দুদিন ধরে গভীর সমুদ্র থেকে ইলিশবোঝাই ট্রলারগুলো আলীপুর-মহিপুর মত্স্যবন্দরের আড়তগুলোতে ফিরে আসতে শুরু করেছে। কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে, আড়তদার ও মত্স্যজীবীদের মুখে। স্থানীয় মত্স্য আড়তদাররা ইলিশ সংগ্রহ করে পিকআপ ও ট্রাকবোঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ায় উপকূলীয় জেলেপল্লী ও আড়তগুলোতে আনন্দের জোয়ার বইছে। মত্স্য ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিটি ট্রলার ২০ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি করেছে। বর্তমানে স্থানীয় আড়তগুলোতে গ্রেড অনুযায়ী প্রতিমন ইলিশ ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে গভীর সমুদ্রে জেলেদের সাইনজালসহ অগভীর জলে খুটা জালেও পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ছে। চট্টগ্রামের এফ বি টিপু-২ নামের একটি ট্রলার ১০৫ মন ইলিশ মাছ বিক্রি করেছে। এ ছাড়া একই মালিকের এফ বি টিপু-৩ ১৫৮ মন ইলিশ মাছ নিয়ে তীরে ভিড়ে। তারা মহিপুর মত্স্য আড়তে প্রতিমন ২২ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছে। গভীর সমুদ্র থেকে তীরে ফিরে আসা প্রতিটি ট্রলার বিপুল পরিমাণ মাছ নিয়ে এসেছে। অগভীর সমুদ্রেও খুটা জালে বড় সাইজের ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়ছে। মত্স্য অধিদফতরের কার্যকরী পদক্ষেপ ও পরিকল্পনায় ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মত্স্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটা, আলীপুর ও মহিপুরের আড়তগুলোতে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের দম ফেলার ফুরসত নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য সারি সারি পিকআপ ও ট্রাক অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া দূর-দূরান্তের পরিবহনের ছাদেও ককসিট বোঝাই করে ইলিশ বহন করতে দেখা গেছে। কুয়াকাটার ঝুমা ফিশের মালিক সোবাহান মৃধা বলেন, কিছুদিন ধরে খুটা জালে বেশ মাছ পড়ছে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় ফিরে আসা ট্রলারগুলো সাগরে যেতে পারছে না। মহিপুরের শাহজালাল ফিশের মালিক নাহিদ আকন বলেন, দীর্ঘপ্রতীক্ষার পর জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ছে। তার আড়তে গতকাল সকালে প্রচুর মাছ বেচাকেনা হয়েছে। এভাবে মাছ ধরা পড়লে জেলেরা লাভের মুখ দেখবে বলে তিনি আশাবাদী। মহিপুর মত্স্য আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দাস জানান, সন্তোষজনক মাছ ধরা পড়ছে। এভাবে মাছ ধরা পড়লে মত্স্যজীবীরা দায়-দেনা মুক্ত হতে পারবে। তবে ইলিশের দাম কিছুটা কমে গেলেও জেলেরা খুশি। গভীর সাগর থেকে প্রতিটি ট্রলার কম-বেশি মাছ নিয়ে ঘাটে আসছে। এ কারণে মত্স্যবন্দর প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

সিনিয়র উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, গভীর ও অগভীর সমুদ্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে। মত্স্য অধিদফতরের কার্যকরী পদক্ষেপ ও পরিকল্পনায় (প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা, জাটকা সংরক্ষণ, জেলেদের ভিজিএফ/পুনর্বাসন) বিশেষ করে নৌবাহিনী, কোস্টকার্ড, পুলিশ, প্রশাসন ও জনগণের সহযোগিতায় দেশে ব্যাপকহারে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর