মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আয়েশি জীবন কাটছে বুশ-হিটলারের

মোস্তফা কাজল

আয়েশি জীবন কাটছে বুশ-হিটলারের

আয়েশি জীবনযাপন শুরু করেছে দুই সিংহ শাবক বুশ ও হিটলার। জন্মের পর মায়ের আদর-যত্ন না পাওয়া বুশ আর হিটলারকে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের চিকিৎসা কেন্দ্রে রেখে লালনপালন করা হচ্ছে। সেখানেই সাদা সিংহ শাবক হিটলার ও বুশকে পরিচর্যা করা হচ্ছে। এ বুশ ও হিটলার আর কেউ নয় সাফারি পার্কে জন্ম নেওয়া বিরল প্রজাতির দুটি সাদা সিংহ শাবক। সিংহ শাবকগুলো ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে। এ ছাড়া আরও ১২টি সিংহ শাবক কাছাকাছি সময়ে জন্মেছে এ সাফারি পার্কে। তাদের সবারই এখন বয়স এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। বুশ আর হিটলারের জন্ম ২৬ জানুয়ারি বলে জানিয়েছেন পার্কের দায়িত্বরত কর্মকর্তা শিব প্রসাদ ভট্টাচার্য। আফ্রিকান ধূসর লাল সিংহ দম্পতির ঘরে বিরল সাদা সিংহ শাবক দুটির জন্ম হয়। জন্মের পর দেখতে সাদা ও ব্যতিক্রম হওয়ায় মা সিংহ তাদের দুধ খেতে দিত না। এতে তারা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছিল। এরপর পার্কের এনিম্যাল কিপার নূরুন নবী মিন্টু তাদের যত্ন নেওয়া শুরু করেন। নিজেই ফিডার দিয়ে থাইল্যান্ড থেকে আনা কুকুকেট নামের বিশেষ দুধ দৈনিক আট বার খাওয়াতেন। এখনো তাদের দিনে দুবার করে দুধ খাওয়ানো হয়। এ ছাড়া অন্য সিংহ শাবকদের মতো প্রতিদিন কিছু পরিমাণে মাংস খেতে দেওয়া হয়।

সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছেন, পশু-পাখির তুলনায় জনবল কম হলেও তাদের যত্ন ও চিকিৎসায় অবহেলা হয় না। অপর দিকে যতই দিন যাচ্ছে ততই দর্শনার্থীর চাপ বাড়ছে। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এ পর্যন্ত ১৪টি সিংহ শাবকের জন্ম হয়েছে। এর মধ্যে বিরল প্রজাতির সাদা সিংহ শাবক দুটির নাম রাখা হয়েছে হিটলার ও বুশ। নূরুন নবী মিন্টু শুরু থেকেই পার্কের পশু-পাখির যত্ন নেওয়া ও খাবার খাওয়ানোর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নূরুন নবী জানান, শাবক দুটি এখন সুস্থ, দৌড়াতে পারে। ছোট থাকায় কাউকে কিছু বলে না। পার্কের চিকিৎসা কেন্দ্রে একটি কক্ষে রাখা হয়েছে হিটলার ও বুশকে। বর্তমানে তারা আয়েশি জীবনে রয়েছে। এরপর এরা ঝুঁকিমুক্ত হবে। পরে তাদের অন্য সিংহের দলের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ সাফারি পার্কে বর্তমানে বড় ও ছোট মিলিয়ে সিংহ রয়েছে ৩৯টি। বাঘ রয়েছে ১০টি, ভাল্লুক ১৫, ক্যাঙ্গারু ৩, জিরাপ ১০, জেব্রা ১৪টি ও বনগরু ১২টি। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেড় বছর বয়সী ১৮টি সিংহ আনা হয়। সে থেকে সবগুলো সিংহকে একত্রে পার্কের কোর সাফারি জোনের সিংহ বেষ্টনীতে উন্মুক্ত করে রাখা হয়েছে। পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পুরুষ সিংহ চার বছর আর নারী সিংহ তিন বছর হলেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়। সিংহী একসঙ্গে দুই থেকে তিনটি বাচ্চা প্রসব করে থাকে। পার্কের বন্যপ্রাণী সুপারভাইজার আনিসুর রহমান বলেন, সাধারণত দুই ধরনের সিংহ দেখা যায়। যার একটি এশিয়ান ও অন্যটি আফ্রিকান। পার্কে থাকা আফ্রিকান লাল সিংহের জন্ম নেওয়া শাবকদের গায়ের রং সাদা হয়েছে। জেনেটিক কারণেই মা-বাবা থেকে আলাদা রং পেয়েছে শাবক দুটি। তবে পার্কটিতে পশু পাখির তুলনায় জনবল অনেক কম রয়েছে। পার্কে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা জানায়, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বিশেষত্ব হচ্ছে পশু পাখি সবই উন্মুক্ত রয়েছে। মানুষ নিরাপত্তার মধ্যে থেকে পশু-পাখি একসঙ্গে দেখতে পারছে।

সর্বশেষ খবর