বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রপ্তানির নতুন বাজার আফ্রিকা

বাংলাদেশের ওষুধ, পাঁপড় ভাজা ও আগর কাঠের ব্যাপক চাহিদা বাড়ছে

মানিক মুনতাসির

রপ্তানির নতুন বাজার খুঁজে পেয়েছে সরকার। আফ্রিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ওষুধ, আগর কাঠ আর পাঁপড় ভাজা। এ অঞ্চলে বাংলাদেশি কিছু খাবারেরও প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এজন্য রপ্তানি বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে আফ্রিকা অঞ্চলকে বেছে নিয়েছে ইপিবি। এ অঞ্চলে রপ্তানির বাজার সৃষ্টি করতে এবং বাংলাদেশি পণ্য জনপ্রিয় করতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে গেটওয়ে হিসেবে কাজে লাগাতে চায় সরকার। সম্প্রতি বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে এক বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শুধু তাই নয়, রপ্তানির নতুন বাজার অনুসন্ধানে করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জন্য একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করা হয়েছে। ওই সারসংক্ষেপ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, এর আগে ২০১৩ সালের ১৮ থেকে ৩১ মে বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দক্ষিণ আফ্রিকা, মোজাম্বিক, জাম্বিয়া সফর করে। সে সময় ওই তিন দেশের ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা ও বাণিজ্যসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। এসব দেশে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধের ব্যাপক চাহিদা ইতিমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। এ চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়া এ অঞ্চলের দেশগুলোয় দিনাজপুরের পাঁপড় ভাজা ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন বাজার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে। আর আফ্রিকার মতো অন্য সম্ভাবনাময় দেশগুলোকেও বেছে  নিয়ে পরিকল্পনামাফিক এগোতে পারলে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে। ইপিবির সূত্রে জানা গেছে, সরকার ‘এক জেলা এক পণ্য’ নীতি বাস্তবায়নে জোর দিয়েছে। সরকারের এই নীতির আলোকে কাজ শুরু করেছে ইপিবি। ইতিমধ্যে তিনটি জেলায় তিন পণ্য নির্ধারণ ও সে অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন চলছে। এর মধ্যে দিনাজপুরে পাপাডাম (পাঁপড় ভাজা), সিলেটে আগর কাঠ ও বান্দরবানে রাবার নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য জেলায়ও এ কার্যক্রম শুরু হবে। আর এসব পণ্য আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মনে করে ইপিবি। শুধু তাই নয়, ইউরোপের রেস্তোরাঁয়ও পাঁপড় ভাজার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ পণ্যের বাজার প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার, যার পুরোটাই এখন ভারতের দখলে রয়েছে। ভারতে শ্রমমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ইউরোপের অনেক রেস্তোরাঁর মালিক বাংলাদেশি হওয়ায় বাংলাদেশের পাঁপড়ের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলে বাংলাদেশি পাঁপড় রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র জানায়, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানি আয় ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে চায়। সে লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন নতুন রপ্তানি বাজার অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সারা দেশ থেকে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে অপ্রচলিত পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর