বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গাড়ি ছিনতাইয়ের ভয়ঙ্কর চক্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেপরোয়া হয়ে উঠছে গাড়ি ছিনতাইকারী চক্র। দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে। ভয়ঙ্কর এই চক্রের সদস্যরা রেন্ট-এ কার থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে দূরে কোথাও চলে যাচ্ছে। পথে ছিনতাইকারী চক্রের অন্য সদস্যদের গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। এরপর সুযোগ বুঝে চালককে মারধর করে নামিয়ে দিয়েই গাড়ি নিয়ে দিচ্ছে চম্পট। এমনকি গাড়ি ছিনতাইয়ে বাধা দিলে চালককে হত্যা পর্যন্ত করছে তারা। গাড়ি ছিনতাইয়ের ভয়ঙ্কর এ চক্রের সদস্যরা   মাঝেমধ্যে ধরা পড়লেও জামিনে বেরিয়ে এসে আবার একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে। গত এক বছরে শুধু রাজধানীতেই দুই হাজার গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো তত্পরতাই এখন আর কাজে আসছে না। ঈদ মৌসুমে ছিনতাইকারীর এই চক্রটি ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। এ অবস্থায় গাড়ি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর সকালে গাড়ি ছিনতাই চক্রের এক সদস্য পল্টনের মুক্তাঙ্গন থেকে তিন দিনের জন্য একটি প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে। তিনি গাড়িটি নিয়ে রাজবাড়ী সদরে যান। সেখানে তার বাড়িতে ড্রাইভার দেলোয়ার ওরফে তিলুকে থাকতে দেন। পরদিন ৪ সেপ্টেম্বর রাতে তিলুকে নিয়ে যান ফরিদপুরের মধুখালী থানা এলাকায়। পথে তিনটি স্পট থেকে তিনজনকে গাড়িতে উঠিয়ে নেয় ছিনতাইকারী চক্রের ওই দুর্বৃত্ত। পরে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে তিলুকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। একপর্যায়ে তিলুর ওপর দিয়ে প্রাইভেট কারটি উঠিয়ে দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে অচেতন হয়ে পড়ে থাকেন। তিলু মারা গেছে ভেবে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা গাড়িটি নিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মধুখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ৫ সেপ্টেম্বর রাতে তিলুর জ্ঞান ফেরে। তিনি গাড়ির মালিক লিটন হোসেনকে ফোন দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানান। এমন খবরের পর রাতেই লিটন পল্টন মডেল থানায় একটি জিডি করেন (নম্বর-২৯১)। ৬ সেপ্টেম্বর সকালে লিটন মধুখালী থানায় গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা করতে গেলেও থানার ডিউটি অফিসার মামলা নেয়নি। গাড়ির মালিক লিটন হোসেন বলেন, ২৬ জুলাই সাদা কালারের এক্সজিও-এক্স (ঢাকা মেট্রো গ-২৬-১৪৩২) প্রাইভেট কারটি কিনেন। ১ আগস্ট পল্টনের মুক্তাঙ্গন থেকে গাড়িটি ভাড়ায় চলা শুরু হয়। গাড়ির ড্রাইভার ছিলেন তিলু মোল্লা ওরফে দেলোয়ার। ৫ সেপ্টেম্বর গাড়ি ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছে জানতে পেরে ৬ সেপ্টেম্বর সকালে ফরিদপুরের মধুখালী থানায় যান। কিন্তু ডিউটি অফিসার মামলা না নিয়ে টালবাহানা করেন। তিনি আরও বলেন, গতকাল ড্রাইভার তিলুকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসি। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দিয়ে মধুখালী থানার ওসি রুহুল আমিনকে ফোন করালেও তিনি মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। ধারণা করা হচ্ছে, ছিনতাইকারী এ চক্রের সঙ্গে ওসি রুহুল আমিন জড়িত থাকতে পারেন। এ বিষয়ে ফরিদপুরের মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, আমার কাছে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি।

সর্বশেষ খবর